দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

বেলগাছি গ্রাম এখন পাখির অভয়ারণ্য

0

তৌহিদ তুহিন, চুয়াডাঙ্গা থেকে :

চুয়াডাঙ্গা শহর সংলগ্ন বেলগাছি গ্রাম। গ্রামে প্রবেশ করলেই চোখে পড়ে বিভিন্ন গাছের ডালে বেধে রাখা আছে অসংখ্য মাটির ভাঁড় বা ছোট কলস। রাস্তার দুই পাশে গাছেল ডালে বেধে রাখা আছে প্রায় দেড় হাজার মাটির কলস আর চারশ`বাঁশের ঝুড়িই। এ গুলো পাখিদের নিরাপদ আশ্রয়ের বাসস্থান। গ্রামের মাঠে-ঘাটে এখন বিলুপ্ত প্রায় দেশি প্রজাতির বিভিন্ন পাখি ও অতিথি পাখিদের নিরাপদ বিচরণ দেখা মেলে খুব সহজেই চুয়াডাঙ্গা সংলগ্ন বেলগাছিতে। এই গ্রামের মানুষের প্রতিদিন ঘুম ভাঙ্গে পাখির কলধ্বনিতে।বেলগাছি গ্রামের শিক্ষক বখতিয়ার হামিদ বিপুল ও বখতিয়ার হোসেন দুই বন্ধু মিলে শুরু করেন পাখি রক্ষার কাজ। পরে তাদের সাথে যোগ দেয় গ্রামের ৩৫ জন যুবক। সবাই মিলেই গড়ে তোলেন ‘বেলগাছি যুব সমাজ’। এরইমধ্যে পাখি শিকার নিষিদ্ধ করেছে সংগঠনটি। গ্রামজুড়ে তাই পাখির কলরব।

শিক্ষক বকতিয়ার হামিদ বলেন,ছোট বেলায় দেখতাম গ্রামের পুকুর, বিল ও মাঠ-ঘাট থেকে পাখি শিকারিরা বন্দুক, ফাঁদ পেতে, গাছে আঠা দিয়ে নিরীহ পাখি শিকারের দৃশ্য। সেই থেকে প্রতিজ্ঞা করি একদিন পাখি শিকার বন্ধ করবো। আর পাখিদের নিরাপদ আশ্রয় গড়ে তুলবো। সেই একক চেষ্টায় পাখিদের অভয়ারণ্য বেলগাছি গ্রাম। পাশে পেয়েছে বেলগাছি গ্রামের ‘যুব সমাজ’ নামের সংগঠনটি।যাদের একান্ত প্রচেষ্টায় পাখিদের অভয়াশ্রম গড়ে উঠেছে সেই শিক্ষিত যুবকরা হলেন- শাহিন, সাহেল, টুটুল, সাব্বির, সাদ্দাম, মোমিন, সোনা, ফয়সাল, ফিরোজ, সবুজ, আরাফাত, আব্দুলসহ প্রমুখ।বেলগাছি গ্রামের কৃষক আলী আহম্মেদ বলেন ,গ্রামের যুবকরা পাখি সংরক্ষণ করার কারণে ক্ষেতের ক্ষতিকর পোকা-মাকড় খাচ্ছে পাখিরা। কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় কম।

চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জিপু চৌধরী জানান, শিক্ষিত যুবকরা নিজেদের অর্থ ও প্রচেষ্টায় বেলগাছি গ্রাম পাখিদের প্রিয় আবাস ভূমিতে পরিণত করেছে। অবাধে পাখি শিকার বন্ধ হয়েছে। প্রাকৃতিক সোন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।চুয়াডাঙ্গার ডিসি গোপাল চন্দ্র দাস বলেন, এটি খুবই ভালো উদ্যোগ। এর ফলে এলাকায় পাখির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, পাখিরা অবাধে বিচরণ করতে পারছে। চুয়াডাঙ্গার সাবেক ডিসি জিয়াউদ্দীন আহম্মেদ সবার সহযোগীতায় চুয়াডাঙ্গাকে পাখিদের অভয়ারণ্য ঘোষনা করেন।ফলে পুরো জেলা পাখিদের অভয়ারণ্য হওয়ায় এখন এ জেলায় যে দিকেই তাকানো যায় কোন না কোন পাখি যেমন দেখা যায়। তেমনই সারাক্ষণ পাখিদের কিচির মিচির ডাকও কানে আসে। এমন উদ্যোগ নেয়ায় বাংলাদেশের মানুষ চুয়াডাঙ্গাকে নতুন করে চিনছে পাখিদের অভয়ারণ্য জেলা হিসাবে।

ঢাকা, বুধবার, ফেব্রুয়ারী ২৬, ২০২০ (বিডিলাইভ২৪) // রি সু

Leave A Reply

Your email address will not be published.