এবারের বাংলা নবর্বষে বান্দরবানে পালন হচ্ছে না ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সাংগ্রাই ও বৈশাবি উৎসব
মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
নোভেল করোনা ভাইরাসের কারণে র্পাবত্য জেলা বান্দরবানে এবার পালন হচ্ছে না ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের প্রধান সামাজিক ও ধর্মীয় উৎসব সাংগ্রাই ও বৈশাবি উৎসব। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে এসিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা।
তিনি শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার সময় জেলা পরিষদের হল রুমে এবিষয়ে এক জরুরী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানিয়েছেন। এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা পরিষদ সদস্য ক্য সা প্রæ, লক্ষীপদ দাশ ও কাঞ্চন জয় তঞ্চঙ্গ্যা, বান্দরবান প্রেস ক্লাব সভাপতি মুনিরুল ইসলাম মনু, সাবেক সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক মিনারুল হক, প্রথম আলো পত্রিকার বান্দরবান প্রতিনিধি বুদ্ধজ্যোতি চাকমা, আর টিভি প্রতিনিধি মো: শাফায়েত হোসেন, বৈশাখী টিভি প্রতিনিধি জহির রায়হান, জি টিভির প্রতিনিধি মো: ইসহাক, দৈনিক দিনপ্রতিদিন ও প্রেসটিভি বান্দরবান প্রতিনিধি মোহাম্মদ আলী, সাংবাদিক লুফর রহমান উজ্জল প্রমুখ।
এসময় চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা জানান, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে পার্বত্য জেলা পরিষদের পক্ষ বান্দরবান ৭ উপজেলার উৎসব কমিটি ও ক্যয়াং বা জাদির ধর্মীয় গুরু (ভান্তে) দের এবার সাংগ্রাই ও বৈশাবি উৎসব কোন অনুষ্ঠান আয়োজন না’করার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। তিনি জেলা পরিষদের আহবান সকলেই দেশ ও জাতির চিন্তার করে মেনে নিয়েছে। এসময় তিনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের লোকজনকেও সাংগ্রাই ও বৈশাবি সকল ধরণের অনুষ্ঠান থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়েছে। তবে তিনি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সম্মিলিতিভাবে কোথাও জমায়েত বা জড়ো হয়ে কোন ধরণের অনুষ্ঠান বা আনন্দ-উল্লাস না’করে ঘরে বসে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যে দিনগুলোকে পালন করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন।
এসময় চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা আরো জানান, বান্দরবানে ৩৬০টি ক্যয়াং (জাদি) রয়েছে। তার মধ্যে বান্দরবান সদর উপজেলায় ১০৬টি, রোয়াংছড়ি উপজেলায় ৫৫টি, থানছিতে ২৪টি, রুমাতে ৫২টি, আলীকদমে ২২টি, লামায় ৬২টি ও নাইক্ষ্যংছড়িতে ৫৪টি ক্যয়াং (জাদি) রয়েছে। পার্বত্য জেলা পরিষদ এই প্রতিটি ক্যয়াং (জাদি)তে ধর্মীয়গুরু (ভান্তে) দের জন্য জাদি প্রতি প্রতিটি প্যাকেট ২৫কেজি চাউল, ৫কেজি আলু, ১কেজি ডাল, ১লিটার তেল, ১কেজি চিনি, ২৫০গ্রাম দুধ, ২০০গ্রাম চা-পাতা প্রদান করা হবে জানিয়েছেন পরিষদ চেয়ারম্যান। তবে জেলা সদরসহ উপজেলার যেসব বড় বড় জাদি রযেছে তাদের ক্ষেত্রে এসব খাদ্যসামগ্রীর পরিমান দ্বিগুন দেয়া হবে বলেও জানিয়েছে। এছাড়াও পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা আরো জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত নগদ ৫০লাখ টাকা ও ২০০মেট্রিকটন খাদ্যশস্যের মধ্যে জেলা পরিষদ ইতিমধ্যে ৩৩ইউনিয়নে প্রতিটি ইউনিয়নের জন্য ৪৫০পরিবার এবং ২টি পৌরসভার নিম্ন আয়ের ১৩’শ ৫০জন পরিবারের মাঝে ১৪৪মেট্রিকটন খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। পরে জেলা চেয়ারম্যান ক্য শৈ হ্লা উপস্থিত সকলকে করোনা পরিস্থিতে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও সবার সুস্থতা কামনা করেন।