দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

লজ্জায় আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ১৪ বছরের ঊর্মি

0

আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিলো রাজধানীর বাসাবোর স্কুলছাত্রী ঊর্মি আক্তারকে। কিশোরী ঊর্মি এ থেকে রক্ষা পেতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলো। বখাটেদের দাবিকৃত টাকা দিতেও চেষ্টা করেছিলো সে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। অপমানে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় ১৪ বছর বয়সী ঊর্মি।

এ ঘটনায় স্থানীয় দুই যুবকের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। গতকাল সোমবার (৫ জুলাই) সকালে রাজধানীর সবুজবাগ থানায় ঊর্মির বাবা মো. আবুল হোসেন বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর মো. শামীম (২০) ও মো. ফাহিম (২০) নামে দুই বখাটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, আসামিরা অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তার মেয়েকে বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করতো। বখাটেরা ঊর্মির কাছে ২০ হাজার টাকা দাবি করে। সামাজিক মর্যাদার বিষয়টি ভেবে কিশোরী ঊর্মি তাদের নগদ তিন হাজার টাকা দেয়। তারপরও বখাটেরা ঊর্মির কাছে বাকি ১৭ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে ধারণকৃত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।

বিষয়টি জানার পর মেয়েকে এ বিষয়ে সান্ত্বনা দেন তার মা। তারপর ওই রাতেই ঘটে ঘটনা। অশ্লীল ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার কারণে লোক লজ্জার ভয়ে উত্তর বাসাবোর নানির বাড়ির দ্বিতীয় তলায় ফ্যানের সঙ্গে গলায় কাপড় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে ষষ্ঠ শ্রেণির এই ছাত্রী। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সবুজবাগ থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মো. লিটন মিয়া জানান, স্কুলছাত্রী ঊর্মি আক্তারের আত্মহত্যার ঘটনায় পর্নোগ্রাফি ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ওই কিশোরীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করছিলো শামীম ও ফাহিম নামে দুই বখাটে। ব্ল্যাকমেইল করার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আসামিদের আদালতে হাজির করে আজ রিমান্ড আবেদন করা হবে।

নিহত ঊর্মির পরিবারের সদস্যরা জানান, বাসাবোতে তার নানার বাড়িতে থাকতো ঊর্মি। সেখানে বাসাবো বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তো। এরমধ্যেই প্রেমের ফাঁদে ফেলে ওই স্কুলছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে শামীম। ওই ভিডিও দেখে শামীম ও ফাহিম দুইজনই তাকে নির্যাতন করতো। এ থেকে রক্ষা পেতে চাইলে কিশোরী ঊর্মির কাছে নগদ অর্থ দাবি করে বখাটেরা।

দাবিকৃত পুরো টাকা না পেয়ে ভিডিওটি অনলাইনে ছড়িয়ে দেয় তারা। অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ঊর্মি। তবে গ্রেপ্তারের পর গতকাল আসামিরা এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করেছে। গ্রেপ্তারকৃত শামীম দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে কর্মরত এবং ফাহিম একজন শিক্ষার্থী বলে জানিয়েছে পুলিশ। নিহত ঊর্মি আক্তার বাসাবোতে নানার বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করতো। সূত্র: মানবজমিন

Leave A Reply

Your email address will not be published.