সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে সিসিটিভি ক্যামেরা বাধ্যতামূলক করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ইউনাইটেড ইসলামী পার্টি। পার্টির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, একটি গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করার উদ্দেশ্যে ‘একেকবার একেক ধরণের পদক্ষেপ’ গ্রহণ করছে। তারই অংশ হিসেবে সারাদেশে সহিংসতা চালানো হয়েছে। সম্প্রতি কুমিল্লার ঘটনায় দেশজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টির পেছনে দায়ীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তারা।
রবিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা ও ভারসাম্যপূর্ণ সমাজ গঠনে আলেমদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে এ দাবি জানানো হয়। ইসলামী পার্টির চেয়ারম্যান মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইনের সভাপতিত্বে বৈঠকে বক্তৃতা করেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মো. ওমর ফারুক, পার্টির নেতা কাজী মাওলানা আব্দুল কাইয়ুম, হাফেজ কারী মাওলানা আব্দুল মান্নান, মাওলানা মো. তাহেরুল ইসলাম প্রমুখ।
বৈঠকে মাওলানা মো. ইসমাইল হোসাইন বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য সারাদেশে পরিকল্পিত সহিংসতা চালানো হচ্ছে। একবার হেফাজত নিয়ে, একবার মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে, এখন কোরআন অবমাননার নামে হামলা-লুটপাট চলছে। তিনি বলেন, কোরআনকে আল্লাহতায়ালা অধিক সম্মান দিয়েছেন, সেই কোরআন জামায়াত-বিএনপির লোকজন শিবির-ছাত্রদলের ছেলেদের দিয়ে সেই মন্দিরে রেখে এসে তার অবমাননা করেছে।
সাম্প্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও বর্ণবাদ মানব সমাজের সবচেয়ে বড় শত্রু উল্লেখ করে মাওলানা ইসমাইল বলেন, এ শত্রুদের প্রতিহত করতে হবে। এজন্য দেশ, অঞ্চল ও বিশ্বের অসাম্প্রদায়িক মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। মানুষ ও মানবতার দুষমনদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সব সম্প্রদায়ের ধর্ম পালনের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। যারা মন্দিরে কোরআন অবমাননা করেছেন, হিন্দুদের পূজামণ্ডপে আক্রমণ করেছে, মূর্তি ভেঙেছে- এদের সবাইকে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্টকারী ও এরসঙ্গে জড়িত বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মী এবং তাদের দোসরদের গ্রেফতারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে বৈঠকে নেতৃবৃন্দ বলেন, চলমান সংিসতার ঘটনাগুলো সম্পূর্ণ রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও দেশের সামগ্রিক আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে ভারসাম্যহীন করার অপচেষ্টা। কুমিল্লার ঘটনাকে কেন্দ্র করে যে কোনও প্রকার প্রতিক্রিয়া বন্ধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরো কঠোর হওয়ার নির্দেশ দিতে হবে। ফেসবুক ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি-জামাত চক্র যে গুজব ছড়াচ্ছে তাদের প্রত্যেককে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় এনে যথাযোগ্য শাস্তি প্রদান করতে হবে।
এ সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী কোনো সম্প্রদায় অপর সম্প্রদায়ের ধর্ম এবং ধর্মীয় মূল্যবোধে আঘাত হানলে দল-মত নির্বিশেষে তাকে আইনের আওতায় আনতে হবে। দেশের জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। তারা যেন দেশের বাইরে থেকে করা ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা না দেয়। মসজিদ-মন্দিরসহ সকল ধর্মীয় উপাসনালয়ে ধর্মীয় গুরুদের মাধ্যমে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার গুরুত্ব, ফজিলত এবং অপর ধর্মের অনুসারীদের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে