অর্থ আত্মসাতের মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনের মুক্তির দাবিতে আবারও সমাবেশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানটিতে পণ্য সরবরাহকারী বা মার্চেন্টরা।
শুক্রবার বিকাল তিনটায় রাজধানীর শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে তারা সমাবেশ করেন। বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে সমাবেশে জমায়েত হন তারা। এসব ব্যানারে ইভ্যালির সিইও রাসেল ও প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান শামিমা নাসরিনের মুক্তির দাবি জানানো হয়েছে।
ফেস্টুনে তারা লিখেছেন- ‘রাসেল ভাইয়ের মুক্তি চাই’, ‘ইভ্যালি বাঁচলে বাঁচবে গ্রাহক’সহ বিভিন্ন স্লোগান।
গত শুক্রবারও একই দাবিতে শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নিয়েছিল ইভ্যালির গ্রাহক এবং প্রতিষ্ঠানের পণ্য সরবরাহকারীরা।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর অর্থ আত্মসাতের মামলায় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাসেল এবং প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান শামীমা নাসরিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ১৬ সেপ্টেম্বর রাসেল ও শামীমার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আরিফ বাকের নামে ইভ্যালির এক গ্রাহক। মামলাটি হওয়ার পর সেদিন বিকালেই রাসেলকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গ্রেপ্তারের পর গুলশান থানায় করা প্রতারণার মামলায় তিন দিনের রিমান্ড শেষে ২১ সেপ্টেম্বর দুজনকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়। এরপর ধানমন্ডি থানায় করা মামলায় রিমান্ড আবেদন করা হলে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুল হক ইভ্যালির সিইও রাসেলের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলায় তার স্ত্রী শামীমা নাসরিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
রিমান্ড শেষে ধানমন্ডি থানায় করা এক মামলায় ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হলে বিচারক রিমান্ড নামঞ্জুর করে রাসেলকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। বর্তমানে রাসেল কারাগারে আছেন।
এদিকে গত ২২ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি বিক্রি ও হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
৩০ সেপ্টেম্বর ইভ্যালির সব নথি তলব করে হাইকোর্ট। ১১ অক্টোবর বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চে সব নথি দাখিল করেন জয়েন্ট স্টক কোম্পানির রেজিস্ট্রার।
১২ অক্টোবর ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালি পরিচালনার জন্য কমিটি করে দেওয়ার কথা বলেন হাইকোর্ট। একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি, একজন সচিব, চার্টার্ড অ্যাকাউনটেন্ট ও একজন আইনজীবীকে কমিটিতে রাখার ইচ্ছা ব্যক্ত করেন আদালত।
১৮ অক্টোবর আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এইচ এম সামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন বিভাগের সাবেক সচিব মোহাম্মদ রেজাউল আহসান, ওএসডিতে থাকা আলোচিত অতিরিক্ত সচিব মাহবুব কবীর মিলন, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট ফখরুদ্দিন আহম্মেদ, কোম্পানি আইন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ।
তবে আদালতের নির্দেশ আসে যে, আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইভ্যালির কোনো গ্রাহক বা মার্চেন্ট প্রতিষ্ঠানটিকে বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় গঠিত কমিটিকে টাকার জন্য চাপ দিতে পারবেন না।