করোনাভাইরাস মহামারি বিশ্বকে বদলে দিয়েছে। যা মানুষের কল্পনার জগতের বাইরে ছিল তাই ঘটে গিয়েছে গত প্রায় দুই বছরে। তবে এই ভয়ানক ভাইরাসের আবির্ভাব কীভাবে হয়েছে, কোথা থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বের আনাচে কানাচে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এবার এ বিষয়ে আরও আশঙ্কার খবর জানিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, হয়তো এর উৎস সম্পর্কে কোনোদিনই আর জানা যাবে না।
শনিবার সকাল পর্যন্ত বিশ্বে অর্ধকোটি মানুষের প্রাণ কেড়েছে করোনা। তবে এই সংখ্যা শুধু যাদের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছিল তাদের মধ্যে যারা মারা গেছেন। করোনা শনাক্ত হওয়ার আগেই উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও লাখ লাখ মানুষের। যাদেরকে এই সংখ্যার হিসাবে আনা হয়নি।
করোনার উৎস খুঁজতে নানা প্রচেষ্টা চালানোর পর এক প্রকার হাল ছেড়ে দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্বসেরা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। শুক্রবার এক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস ডিরেক্টর অব ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স। সেখানে হতাশা প্রকাশ করে এর উৎস সারাজীবন অধরা থেকে যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর ইয়াহু নিউজের
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আবার, সম্পূর্ণ প্রাকৃতিকভাবে জন্তু জানোয়ারের শরীর থেকে মানুষের দেহে করোনা সংক্রমণও ঘটে থাকতে পারে। তবে এর কোনটি আসল সত্য তা নিশ্চিত নন বিশেষজ্ঞরা।
তবে জৈবিক অস্ত্র হিসেবে করোনাভাইরাসকে কেউ তৈরি করে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দিয়েছে এমন সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দারা।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীন প্রথম বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে অচেনা একটি রোগের কথা জানায়। চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে এটির প্রথম সন্ধান মেলে। মনে করা হয় উহানের একটি কাঁচাবাজার থেকে এটি সংক্রমিত হয়েছে। তারপরই কয়েকদিনের ব্যবধানে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে এটি। প্রায় দেড় বছর বিশ্ব স্তব্ধ ছিল। টিকা আবিষ্কারের পর ফের স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরার চেষ্টা করছে বিশ্ব। তবে এর প্রভাব এখনো শেষ হয়নি। অনেক বিধিনিষেধ এখনো বহাল রয়েছে।
করোনার উৎস খুঁজতে এরই মধ্যে ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একদল বিশেষজ্ঞ। তারা চীনের উহানসহ সেখানের আলোচিত একটি গবেষণাগারও পরিদর্শন করেন। বিস্তারিত গবেষণার পর তারা জানান যে, উহানের কাঁচাবাজার বা এর ল্যাব থেকে করোনার উৎপত্তি হয়েছে কি না তা নিশ্চিত নয়। এর জন্য আরও বিস্তর গবেষণার প্রয়োজন।
তবে করোনার শুরু থেকেই তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বরাবরই এটিকে 'চীনা ভাইরাস' হিসেবে উল্লেখ করেন। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বাকযুদ্ধ শুরু হয়। চীন থেকে এই ভাইরাস বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে বলে দাবি করে যুক্তরাষ্ট্র। সেই অভিযোগ বরাবরই অস্বীকার করে আসছে চীন। তবে অবশেষে মার্কিন গোয়েন্দারাও এর উৎস খুঁজতে ব্যর্থ হলেন।
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোফাজ্জল হোসেন
Copyright © 2024 দৈনিক নবতান. All rights reserved.