নান্দাইল (ময়মনসিংহ)প্রতিনিধিঃ
ঘটনাটি ঘটছে নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামে। ঘটনায় জানাযায়, ১৩ বছর পূর্বে উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের মাদারীনগর গ্রামে হাজী আব্দুর রশিদের পুত্র মোজাম্মেল হক (৩৮) বিয়ে করেন কামরুন্নাহার সালমা (২৬) কে। কামরুন্নাহার সালমা পাশ্ববর্তী ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কবির ভুলসুমা গ্রামে হাবিবুর রহমানের কন্যা । ঘটনাটি ঘটিয়েছে নান্দাইল উপজেলার চপই দাখিল মাদ্রাসায় সহকারী সুপার হিসাবে দায়িত্ব শিক্ষক মোজাম্মেল হক ।
বিয়ের ১৩ বছরে মোজাম্মেল ও কামরুন্নাহার সালমার সংসারে জন্ম নেয় ৪ কন্যা সন্তান। এতেই ঘটে স্বামী মোজাম্মেলের বিপত্তি। ৪র্থ কন্যা সন্তান জন্মের পরেই ঘটে স্ত্রী সালমার উপর নির্যাতন নিপীড়ন। ৪ কন্যা সন্তান নিয়ে বিপাকে পড়েন সালমা। এক পর্যায়ে মারধর করে স্বামী মোজাম্মেল স্ত্রী সালমাকে বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জে পাঠিয়ে দেয়। পরে পরিবারের সহযোগিতায় কামরুন্নাহার সালমা নান্দাইল মডেল থানায় ৩ জনের নামে মামলা করে। গত বৃহস্পতিবার রাতে নান্দাইল মডেল থানা পুলিশ স্ত্রী কামরুন্নাহার সালমাকে স্বামী মোজাম্মেলের বাড়িতে রেখে আসে।
নান্দাইল মডেল থানার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ২০০৯ সালে কামরুন্নাহার সালমার বিয়ের পর সংসারে ৪ টি কন্যা সন্তান জন্ম হয়৷ একের পর এক কন্যা সন্তান জন্ম । আর ছেলে সন্তান না হওয়ার কারন স্বামী মো. মোজাম্মেল হক ও তার ভাই মোস্তফা ভাবি দেলোয়ারার পরস্পর যুগসাজসে কামরুন্নাহার সালমার উপর শুরু হয় অত্যাচার নির্যাতন । নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সালমা বাবার বাড়ি ঈশ্বরগঞ্জে অবস্থান নেয়। এম অবস্থায় সন্তান ও স্ত্রীর ভরণ পোষণ বন্ধ করে দেন স্বামী মো. মোজাম্মেল হক । বিষয়টি নিয়ে গ্রাম্য আদালতে সালিস বৈঠক করেও কোন ফয়সালা হয়নি। এ অবস্থায় দ্বিতীয় স্ত্রী সালমার অনুমতি না নিয়ে ২য় বিবাহে আবদ্ধ হওয়ার পায়তারা করে দ্বিতীয় স্ত্রী সালমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করে তাকে হয়রাণী করা হচ্ছে বলে স্থানীয় সংবাদ কর্মীদের নিকট অভিযোগ করেন ভুক্ত ভোগী নারী।
গত শুক্রবার (২৯জুলাই) দুপুরে স্বামী মোজাম্মেল হক স্ত্রী কামরুন্নাহার সালমা ও ৪ কন্যা সন্তান কে রেখে পাশ্ববর্তী কেন্দুয়া উপজেলায় এক কিশোরীকে বিয়ে করে রাতে নববধুকে নিয়ে বাড়ি আসে। ঘটনার সময় প্রথম স্ত্রী সালমাকে রাতেই পুলিশ আবার থানায় হেফাজতে নিয়ে আসে। অপর দিকে স্বামী মোজাম্মেল নববধু কে ঘরে তুলে নিয়ে আসেন।
কামরুন্নাহার সালমা বলেন, আমার স্বামী আমার ৪ কন্যা সন্তান কে রেখে অনত্র বিয়ে করছে। আমাকে ডির্ভোস দেয়নি। আমি স্বামীর বাড়িতে আছি আমার অধিকার আমি চাই।
এ বিষয়ে স্বামী মোজাম্মেল হক বলেন, আমি তার বিরুদ্ধে মামলা করেছি এবং তাকে যথাযথ ভাবেই তালাক দিয়েছি।
নান্দাইল মডেল থানার উপ-পরিদর্শক এসআই মো. সবুর উদ্দিন বলেন, স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে তার স্বামীর বাড়িতে রেখে এসেছি। আর ডির্ভোসের কাগজপত্র স্বামীকে দিতে বলা হয়েছে। মোজাম্মেল হক বিয়ে কয়টা করবে সেটা তার ব্যাপার।
নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, স্ত্রী কামরুন্নাহার তালাকপ্রাপ্ত হওয়ায় যাতে কোন অঘটন না ঘটে সেজন্য বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে৷