নবতান ডেস্ক:
হিজাব পরিধানের বিধান লঙ্ঘন করে কেউ রাস্তায় বের হলে তার প্রতি কোনো দয়ামায়া দেখানো হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইরানের প্রধান বিচারপতি গোলামহোসেন মোহসেনি এজি।
শনিবার (১ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ইরানের সংবাদমাধ্যমগুলো।
গত বৃহস্পতিবার ইরানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে দেয়। সেখানে সরকারের অত্যাবশ্যকীয় হিজাব আইন প্রয়োগ করা হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতির পরই কঠিন ভাষায় হুমকি দিয়েছেন দেশটির প্রধান বিচারপতি।
তিনি বলেছেন, ‘হিজাব ছাড়া চলা আমাদের নীতি-নৈতিকতার সঙ্গে শত্রুতা করার সামিল। যারা এ ধরনের বিশৃঙ্খল কাজ করবে তাদের শাস্তি দেওয়া হবে। তাদের কঠোর বিচার করা হবে কোনো দয়ামায়া ছাড়া।‘ তবে কী ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে সেটি স্পষ্ট করেননি তিনি।
ইরানের প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, ধর্মীয় আইনের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অস্বাভাবিক কোনো কিছু ঘটলে সেটি আদালতকে অবহিত করতে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী বাধ্য।
এদিকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে হিজাব পরিধানের বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগে নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন মাহসা আমিনী নামের এক কুর্দি তরুণী। এরপর পুলিশ হেফাজতেই মৃত্যু হয় তার। এ নিয়ে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে যায় পুরো ইরান। অনেক নারী হিজাব পরার আইন ভঙ্গ করেন।
এখনো অনেককে শপিংমল, রাস্তা, রেঁস্তোরা, দোকানে হিজাব ছাড়া ঘুরতে দেখা যায়। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নৈতিকতা পুলিশের সঙ্গে নারীদের হাতাহাতি ও বিবাদের ভিডিও ঘুরপাক খাচ্ছে।
১৯৭৯ সালে ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানে শরিয়া আইন জারি করা হয়। আইন অনুযায়ী, নারীদের মাথা ঢেকে রাখতে হয় এবং বাধ্যতামূলকভাকে ঢিলেঢালা পোশাক পরতে হয়। যারা এ আইন ভঙ্গ করেন তাদের জেল, জরিমানা অথবা তিরস্কার করা হয়।হিজাবকে ‘ইরানের সভ্যতার অন্যতম ভিত্তি’ এবং ইসলামিক রিপাবলিকের অন্যতম ‘বড় নীতি’ হিসেবে উল্লেখ করে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিবৃতিতে প্রকাশ করে বলেছে, ‘এই বিষয় নিয়ে কোনো কিছু সহ্য করা হবে না।’ এছাড়া যারা হিজাব পরেন না তাদের প্রতিরোধ করতে অন্য নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমন নির্দেশের পর ইরানে নারীদের মধ্যে অতীতে সংঘর্ষ হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে।