নিজস্ব প্রতিবেদন
ঢাকার ধামরাইয়ে গরু চুরির মামলায় ঢাকা জেলা উত্তর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদক বাবলী আক্তারের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রবিবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মিশকাত শুকরানার আদালতে তিনি আইনজীবীর মাধ্যমে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করেন।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খান খোকন বিষয়টি জানিয়েছেন। এ দিন আসামি বাবলী আদালতে হাজিরা দেন।
২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর গরু চুরির ঘটনায় আব্দুল লতিফ বাদী হয়ে ধামরাই থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ওই বছরের ২ নভেম্বর ভোরে সাভারের রেডিও কলোনি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রলীগ নেত্রী বাবলীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন ৩ নভেম্বর বাবলীকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এ এইচ এম হাবিবুর রহমানের আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন। তদন্ত শেষে গত ৬ ফেব্রুয়ারি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধামরাই থানার উপ-পরিদর্শক মো. আশরাফুল ইসলাম আদালতে ছাত্রলীগ নেত্রী বাবলীসহ সাত জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন। এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন, মো. হাবুল সরদার, আরিফ হোসেন, রাজু আহম্মেদ, শাহাদাত হোসেন, বাবলী আক্তার, মো. সাইদুল ইসলাম, মো. মোর্শেদ আলী। এছাড়া নাম ঠিকানা না পাওয়ায় পলাতক গরু চোর ও ট্রাক চালকের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।
মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর রাত ১০টার দিকে সাভারের ধামরাইয়ের আব্দুল লতিফ তার দুটি গরু গোয়াল ঘরে রেখে দরজায় তালা মেরে ঘুমাতে যান। এরপর রাত সাড়ে তিনটির দিকে বাইরে শব্দ শুনতে পান। ঘুম থেকে উঠে দেখেন ৪ থেকে ৫ জন চোর তার দুইটি গরু ট্রাকে তুলে চলে যাচ্ছে। তখন তিনি চিৎকার দিলে আশপাশের লোকজন বের হন। ট্রাক থেকে লাফ দিয়ে পালাতে গিয়ে আহত হন আসামি হাবুল সরদার। এরপর স্থানীয় জনসাধারণ তাকে আটক করে। আসামি আরিফ হোসেন, রাজু আহম্মেদ, শাহাদাত হোসেন, মো. মোর্শেদ আলী ও পলাতক আসামি শহীদ গরু দুইটি চুরি করে নিয়ে এসে আসামি বাবলী আক্তারের কাছে বিক্রয় করে। এরপর বাবলী লাভবান হওয়ার উদ্দেশ্যে গরুগুলো পুনরায় আসামিদের মাধ্যমে বেশি দামে অন্যত্র বিক্রয় করেন।
চার্জশিটে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ৭ নভেম্বর গাজীপুর থেকে আসামি সাইদুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় চুরি হওয়া দেড় লাখ টাকা মূল্যের একটি গর্ভবতী গাভী উদ্ধার করা হয়। এরপর আসামি সাইদুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে উল্লেখ করেন, ‘তিনি একজন কসাই।
ধামরাইয়ের মোরশেদ ও শহীদের কাছে থেকে দুইটা গরু ক্রয় করেছেন।’ আসামি হাবুল সরদার, আরিফ হোসেন, রাজু আহম্মেদ, শাহাদাত হোসেন, মোর্শেদ আলী ও পলাতক আসামি শহীদ এবং অজ্ঞাত পরিচয়ের চালকের বিরুদ্ধে এই মামলার পেনাল কোড ৪৫৭/৩৮০ ধারার অপরাধ, আসামি বাবলীর বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৪১৩ ধারার অপরাধ এবং আসামি সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে পেনাল কোড ৪১১ ধারায় অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
পলাতক আসামি শহীদ ও ট্রাকের অজ্ঞাতনামা চালকদের সঠিক নাম ঠিকানা না পাওয়ায় মামলার দায় হতে অব্যাহতির প্রার্থনা করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে তাদের নাম ঠিকানা পাওয়া গেলে এ মামলার সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হবে।