দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

১৯৭১তথা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারপর্ব সমাধান এখনি জরুরী

0

 

এইচ এস এম মিজানুর রহমান তালুকদার হারুন

কোন পক্ষ-বিপক্ষ বা দলের কথা নয়, আবেগও নয়, দেশপ্রেম ও বিবেকের তাগিতে লেখছি।
আর অন্ধকারচ্ছন্ন নয়, এবার ফুটফুটে উজ্জল আলো দেখতে চাই। কাঁদা ছুড়াছুড়ি, বিতর্ক ও বাড়াবাড়িনয় এবার সঠিক অবস্থা ও বাস্তবতা জানতে চাই।
আমরা জানি ১৯৭১-এ বাংলাদেশের জন্ম লগ্নে এদেশের জনসংখ্যা ছিল ৭ কোটির মতো, যার আজ কোটি খানিক বেঁচে আছে বাকিরা পরপারে। এখন যারা আছেন তারা সবি আমারমতো নতূন প্রজন্মের নাগরিক। আমাদের দেশ স্বাধীনের বয়স ৫১বছর হলেও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস, পক্ষ ও বিপক্ষ জনবলের তথ্য ও বাস্তব ঘটনা প্রবাহ এখনো অন্ধকারে নিমজ্জিত। এই দশা যদি এখনো শেষ না হয় তবে, পরবর্তী অবস্থা কি হতে পারে? জ্ঞানী/গুণীদের উচিৎ নয়যে এখনো বিষয়টা ক্লীয়ার করে জাতিকে বুঝিয়ে দিবার। এবং এই জাতীয় সমস্যার সমধান করার?

বর্তমান প্রজন্ম কি মনে করবেনা যে, এ অবস্থা বা পরিস্থিতিরজন্য রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার যতেষ্ট উদাসীনতা ও কাম-খেয়ালিপনা দায়ি। আসলে ইতিহাসের সত্য-মিথ্যা, জাল-ভেজাল মাপার যন্ত্রটি আর কতকাল অকেজো অবস্থায় থাকবে। স্বাধীনতার পর কোন সরকারই মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস রচনায় খুব একটা সুনজর দিয়েছে বলে মনে হয়নি। বরং বিকৃতির দিকে কম-বেশি সবারই অবদান আছে বলে অনেকের ধারনা। যা শুধু দুঃখ জনকি নয়, অত্যন্ত মর্মান্তিকও।
যদি দিত, তবে ৭১নিয়ে আমাদেরকে আজও অন্ধকারে অপেক্ষা করতে হতো না। বহু আগেই মুক্তিযুদ্ধ ও যোদ্ধাবিষয় বিতর্কের স্থায়ী অবসান হয়ে যেত।
স্পষ্ট হয়েযেত কারা দেশের বন্ধু ও কারা শত্রুু।
যুদ্ধের সময়ে ছিল পাক্কা রাজাকার আর আজ সে খাঁটি মুক্তিযুদ্ধা এমনটা আজো চলমান থাকতোনা।
ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার ছড়াছড়ি, মিথ্যা তথ্যদয়ে রাষ্ট্রীয় সবিধা গ্রহণের পথও বন্ধ হয়েযেত বহু আগেই।

বিশেষজ্ঞরা মনেকরেন, যারা বাংলাদেশ হওয়ারপর সরকারে আসছে তারা যদি অনুধাবন করতো ও সচেষ্টহতো তবে আজও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিদের নিয়ে এমন ধোঁয়াশার মধ্যে থাকতে হতোনা। বলতেগেলে এটা শাসক শ্রেণীর বিশাল ব্যর্থতা। আমি আমার তুলনায় বহু বেশি ভাবি ও লেখি, জানি এসবের কোনটারি তেমন কোন লাভ হবে না! কারণ, প্রত্যেক লেখা, কথা ও বক্তৃতার লাভ তখন-ই প্রতিষ্ঠিত হয় যখন ব্যক্তির পরিধি বড় ও প্রতিষ্ঠিত থাকে। সে তুলনায় আমি খুবেই ক্ষুদ্র, অতি সামান্য ও নগন্য একজন উনিপোকামার্কা নাগরিক মাত্র।

বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সকল অধিকার, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে। দিয়েছে ভাষা/মত প্রকাশের অধিকার সে থেকেই কিন্তু আমার আজকের এ লেখনির প্রয়াস।
যাক, সেই স্বাধীনচেতা থেকেই দেশ ও জাতির অতীবও জরুরী বিষয়ে আজকে আমার এ লিখন। কারণ আমি মুক্তিযোদ্ধা প্রেমী, আমি দেশ প্রেমি, দেশ আমার প্রেম, আমার ভালবাসা, সেই আমার প্রেমের মুক্তিযুদ্ধ। যে মুক্তিযুদ্ধ থেকেই আমার প্রাণের এই বাংলাদেশ আর এ হিসাবে আমি গর্বিত। আমি একান্তভাবে কামনাকরি হে আমার প্রিয় মাতৃভূমি দীর্ঘজীবি হোক তোমার স্থায়ীত্ব।

এই মুক্তিযোদ্ধের অনুপ্রেরণায় যেনি তিনি আর কেহ নয়, তিনি আমাদের বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মজিবুর রহমান। তাই তো তিনি সর্বশ্রেষ্ট বাঙ্গালী এটাই সত্য বলে জানি। যা কারও দয়ায় বা অনুদানে হয়নি, হয়েছে তার অবদানে, কর্তৃত্বে ও নেতৃত্বের ফলে। গণমানুষের ভালবাসা আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে।
তাই তাঁকে কেহ ছোট করার চিন্তা করা যেমন চরম ভুল, তারচেয়ে বড় ভুল ও অন্যায় হলো তাঁকে বিতর্কিত করা ও বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু বানানোর অপ্রিয় প্রচেষ্টা গুলো।
জাতি চাইনা কেহ তার নামে দোকান খুলে ব্যবসা করুক, মুজিব কোর্ট পরে বাংলার মানুষের সাথে প্রতারনা করে বঙ্গবন্ধুর মর্যাদায় আঘাৎ করোক। রাষ্ট্রের টাকা দূর্নীতি করে বিদেশে পাচার করে ভিলিওনার সাজুক। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ আত্মসাত ও চুরিকরে তারা আর যাই হোক বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক হতে পাড়েনা। এমন জঘণ্য কর্মগুলো দেশপ্রেমিক জনগণ ও সুনাগরিকরা কেমনে মানতেপাড়ে? এই অতিলোভীদের কারণে বঙ্গবন্ধু শাসক জীবনে দেশের কাঙ্কিত উন্নয়ন করতে পাড়েনি। ঘোষখোর, চুর-বাটপারদের বিরোধিতায় তিনি ছিলেন খুবেই সতর্ক, করেছেন প্রতিবাদ ও জানিয়েছেন নিন্দা।

আমরা বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু কোন ব্যক্তি ও দলের নয়, তিনি তামাম দেশবাসির নন্দিতনেতা বাঙ্গালী জাতির আদর্শ যা বহমান থাকবে অনন্ত অশীম কাল পর্যন্ত।
বাংলাদেশ নামক দেশটা যতোদিন বেঁচে থাকবে ততোদিন বঙ্গবন্ধুর জীবন-আদর্শ সচল থাকবে।
তাই কোন ব্যক্তি ও দল বঙ্গবন্ধুকে নিয়া কোন প্রকার বিতর্ক, বাড়াবাড়ি ও বানিজ্য করোক এমনটা জাতি দেখতে ও শুনতে চায়না।
আমরা চাই সবার মাঝে সর্বদায় বঙ্গবন্ধুরমত দেশ প্রেম ও ঐক্য ভালবাসা ও সততার আদর্শ ফুটে উঠুক।
চিরস্থায়ী সম্মানের আসন তাঁহার জন্য অক্ষুণ্ণ থাকুক।
বঙ্গবন্ধুকে নিযে সমালোচনা করে বঙ্গবন্ধুর অবদান অস্বীকার করে তার অপমান হয় এমনকর্ম যে বা যারা করে তাদেরকে দেশ ও জাতির শক্রু বলা যায়।

এজাতি বঙ্গবন্ধুকে কোন রকম সমালোচনায় আনাটা ভালমনে করেনা। তেমনি মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী কোন মুক্তিযুদ্ধাকে ছোট বা অবহেলা কারিকেও ঘৃনাকরে। আবার এই মহান প্রাপ্য সম্মান ও সুবিধা কেহ চুরি-চিন্তাই করে জাতির গর্বিত সন্তান মুক্তিযুদ্ধা সাজুক এমনটা কাম্য নয়। যে/যারা এমন চুর সাজবে বা যাদের মাধ্যমে এমন হবে সেই সব জাতীয় বেঈমান তথা মীরজাফরদের প্রতি চির অভিশাপ। লা’নাতুল্লাহ্।

এই মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে কেহ শহীদ, কেহ গাজী, কেহ বীর শ্রেষ্ঠ, কেহ বীর উত্তম, কেহ বীর বীক্রম, কেহ বীর প্রতীক ইত্যাদি খেতাবে ভূষিত হলেও এই প্রজন্মের কাছে মুক্তিযুদ্ধে জড়িত সবাই বীর সীফাহশালা।
কাউকে প্রধান্য বেশি বা কম দেওয়া, কাউকে অবহেলা, কাউকে তিরস্কার করা কারও জন্য শূভনীয় নয়।
তেমনী যাদের আত্মত্যাগে, যাদের মেধা ও সাহসীকতা ও জীবনবাজি যুদ্ধের বিনিময়ে আজ নিজেদেরকে স্বাধীন দেশের নাগরীক দাবীকরি তাদের কাউকে কোন প্রকার অবজ্ঞা, অবহেলা, অপমান করে অকৃতজ্ঞ নাগরীক সাঁজতে আমরা রাজীনই।

তাই গণমানুষের একান্ত দাবি থাকবে, দেশের প্রতিটা দায়ীত্বশীল ব্যক্তিবর্গ বিশেষ করে রাষ্ট্র ক্ষমতার অধিকারীদের নিকট, তারা যেন এই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহনকারী ও বিরোধিতাকারী সকলের যথাযথ অবস্থান নিশ্চিত করে একটি জাতীয় তালিকা ও ইতিহাস রচনা করে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে বিতর্ক মুক্ত করেন। আমরা মহান স্বাধীনতা ও গৌরজ্জৌল মুক্তিযুদ্ধনিয়ে চির জনমেরমত বিতর্কের অবসান চাই।
অন্যতায় আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ঝাঁপসা কোনতেই কেটে উঠবেনা, হতে পারবনা বিতর্ক মুক্ত।

তাই আমাদের একান্ত চাওয়া ও পাওয়ার বিষয় হলো, সাধ্যমত সর্বোচ্চ ও সঠিক তথ্যের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধা ও বিরোধিতাকারী রাজাকার আলবদর যাই হোক না কেন, তাদের নিবন্দিত ও অংশ গ্রহনের তথ্য সহ ঐতিহাসিক ভাবে জাতির সামনে তুলে ধরা হোক। রাষ্ট্রের বড় বড় নেতৃবৃন্দ ও দায়ীত্বশীলদের কাছে বিনীত অনুরোধ রাখবো আপনারা কোনতেই কোন বিতর্কিত মন্তব্য/তথ্যদিয়ে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্তের ভেড়াজালে ফেলে দিবেন না। যথাসাধ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটা নির্ভুল তালিকা জাতিকে উপহারদিন।
এমন কিছু লিপিবদ্ধ করবেন না যা নিয়ে কেহ আপত্তি তুলে কি তুলতে সক্ষম হয়। ডিসেম্বর (২০১৯) শে মুক্তিযোদ্ধা ও রাজাকারের তালিকা প্রকাশের মত কান্ডজ্ঞানহীন কাজ যেন ভবিৎষতে না হয়।

স্বাধীনতার ঘোষক/পাঠক শহীদ রাষ্ট্রপতি মেজর জিয়া, সর্বাধিনায়ক কর্নেল ঊসমানীসহ মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী কোন ব্যক্তির প্রতি কোন রকম হিংসাত্মকভাবে সত্য ইতিহাস থেকে যেন কোন কারণে কাউকে ছিটকে পড়তে না হয়। কারও কৃতিত্ব অস্বীকার করার মধ্যে কোন কর্তৃত্ব আছে বলে আমরা মনে করিনা।
কারও অবদান ও প্রাপ্যকে অস্বীকারকারী আবার সম্মানিত হয় কি করে? কাউকে ছোটকরে বড় হওয়া যায় কি না ? না কি মিথ্যা তথ্যদিয়া ইতিহাস রচিত হয়?
সুতরাং কোন প্রকার বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়িতে না জড়ানোতেই রয়েছে জাতির কল্যাণ ও মহত্ব।
সেই সঠিক বুঝটা যেন আমাদের দেশেরকর্তা ও দায়ীত্বশীলদের মাঝে সৃষ্টি হয় এই প্রত্যাশা রহিল।
জয় বাংলা বাংলাদেশ দীর্ঘজীবি হোক।

লেখকঃ
সভাপতি নান্দাইল সিটিজেন জার্ণালিষ্ট ক্লাব ও সহ সভাপতি নান্দাইল ডিজিটাল প্রেসক্লাব নান্দাইল ময়মনসিংহ।

Leave A Reply

Your email address will not be published.