দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

ধনবাড়ী উপজেলা মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণের শুভ উদ্ধোধন

0

এস,এম আব্দুর রাজ্জাক:

ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির অংশ হিসাবে টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলা মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণের শুভ উদ্ধোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

দেশে যেখানে নারী ফুটবলারদের সংকট আর সেখানেই টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় প্রত্যন্ত অঞ্চলে পাইস্কা ইউনিয়নে অবস্থিত পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে চলছে নারী ফুটবলার তৈরির কাজ। আজ ৬ মে টাংগাইল জেলা ক্রীড়া অফিসের আযোজনে পাইস্কা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে ক্রীড়া পরিদপ্তরের বার্ষিক ক্রীড়া কর্মসূচির অংশ হিসাবে টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলা মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণের শুভ উদ্ধোধন করেন টাংগাইল জেলা ক্রীড়া অফিসার আল আমিন, এ সময় উপস্থিত ছিলেন,পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: মাকউদুল আলম উচ্ছল,পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: তোফাজ্জল হোসেন তালুকদার,পাইস্কা  উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ ধনবাড়ী উপজেলা ‍যুব লীগ সাধারণ সম্পাদক মিলন।

 

ধনবাড়ী উপজেলা মেয়েদের ফুটবল প্রশিক্ষণের খেলা পরিচালনা করেন একজন সাবেক ফুটবলার এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত রেফারি ক্রীড়া সংগঠক জহিরুল ইসলাম মিলন।খেলার মাঝে সিনিয়র দলের নারী ফুটবলারা প্রথমে এক গোল দিলেও শেষ দিকে এসে জুনিয়র নারী ফুটবল দলের ফুটবলারা এক গোল পরিশোষ করেন।

 

নারী ফুটবলাররা টাঙ্গাইল জেলায় দুই দুইবার জেলা চ্যাম্পিয়ন বিভাগীয় পর্যায়ে রানার্সাব নারী ফুটবলে নতুন ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই করে যাচ্ছে ধনবাড়ীর মেয়েরা। মেয়েদের এমন সাফল্যের পেছনে বড় ভূমিকা রয়েছে পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এবং নিজেরা করি সংগঠনের।  এক স্কুল থেকেই প্রায় ১২-১৩ জন খেলোয়াড় খেলছেন টাংগাইল জেলা টিমের হয়ে নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে।

 

 

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রতিবছরই নতুন করে অনেকে যুক্ত হচ্ছেন জেলা নারী ফুটবল দলের বয়সভিত্তিক বিভিন্ন দলে। অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগতে পারে, একটা গ্রাম থেকে, একটা স্কুল থেকে বছরের পর বছর এত নারী ফুটবলার উঠে আসছে কীভাবে? পাইস্কা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক মেয়ে হওয়ায় নিজেরা করি সংগঠন এবং পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোফাজ্জল হোসেন এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মাসউদুল আলম উচ্ছল এর সহযোগিতা নিয়ে জেলা টিমের একজন সাবেক ফুটবলার এবং বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত রেফারি ক্রীড়া সংগঠক জহিরুল ইসলাম মিলন স্যারের হাত ধরে ফুটবলে উত্থান হয় এই মেয়েদের।

 

 

 

প্রথমে ২০২০ সালে পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মেয়েরা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব অনূর্ধ্ব ১৭ কাপের জন্য দল গঠন করে। যদিও প্রথম দুই বছর তারা চ্যাম্পিয়ন হতে পারেননি। পরে আরও কঠোর পরিশ্রম আর অনুশীলনের মাধ্যমে তাদের কোচ জহিরুল ইসলাম মিলন এর হাত ধরে জেলা পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়। আন্তঃ উপজেলায় দ্বিতীয়বারের মতো আবারো চ্যাম্পিয়ন হয়। বিভাগীয় পর্যায়ে ফাইনালে সেই বিখ্যাত কলসিন্ধু স্কুলের সাথে এক শূন্য গোলে হেরে রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে। বাংলাদেশের খ্যাতিনামা ক্লাব বসুন্ধরা কিংস পেকটিস করার সুযোগ পেয়েছে খেলেছে বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে। বিভিন্ন প্রাইমারি স্কুলের ওই মেয়েরা বড় হয়ে পাইস্কা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের যায়। তারপর একে একে যোগ দেন মূল দলে।গ্রামের অতিদরিদ্র পরিবারের প্রায় সবারই অভাবের সংসার। কারও মা রাস্তায় কাজ করেন। কারও বাবা রিকশা চালান। কারও বা আবার শ্রমজীবী পরিবার।

 

 

সে সময় যদি তাদের জিজ্ঞাসা করা হতো, তারা কী চায়, উত্তর পাওয়া যেত, পেট ভরে খেতে চাই। বেশি করে খাবার দিয়ে দিন, বাড়িতে সবাই মিলে খাব। নারী ফুটবলার আঁখি, শিফা,অনন্যা, রোকসানা, ঝরনা বলেন, যে কোন ফাইনাল খেলায় আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, এগারোজনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে। আমরা আমাদের স্বপ্ন ফুটবল খেলেই পূরণ করব।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.