অনেকে তাকে ঢাকাই সিনেমার ‘রঙিন নবাব’ বলে ডাকেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন অসংখ্য কালজয়ী সিনেমায়।
পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ নানা স্বীকৃতি ও কোটি দর্শকের ভালোবাসা। তিনি চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তি অভিনেতা প্রবীর মিত্র।
শুক্রবার (১৮ আগস্ট) তার জন্মদিন। আজ তিনি ৮২ বছরে পা রেখেছেন। ১৯৪১ সালের এই দিনে চাঁদপুর জেলার নতুন বাজারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।
তবে শারীরিক অবস্থা নাজুক থাকার কারণে জন্মদিনে আনন্দ বা উৎসব করার মতো অবস্থায় নেই এ অভিনেতা। আগের মতো আর হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার দিন কাটছে ঘরে হুইলচেয়ারে বসে কিংবা বিছানায় শুয়ে।
প্রবীর মিত্রের ছেলে মিথুন মিত্র জানান, তার বাবা একদমই চলাফেরা করতে পারেন না। তার হাঁটুতে অপারেশন করাতে হবে। চিকিৎসক এমনই পরামর্শ দিয়েছেন। সেটা দেশে নাকি বিদেশে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি।
এর আগে ২০২২ সালের শুরুতে ভারতে অস্টিওপরোসিসে রোগের চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন প্রবীর মিত্র। বর্তমানে নীরবে নিভৃতে ও একাকিত্বে ধানমন্ডিতে ছেলের বাসায় দিন কাটাচ্ছেন এ অভিনেতা।
১৯৭১ সালে এইচ আকবরের ‘জলছবি’ সিনেমা দিয়ে বড়পর্দায় যাত্রা শুরু করেন প্রবীর মিত্র। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে পর্দায় নায়ক চরিত্রে যেমন সফল হয়েছেন, তেমনি চরিত্রাভিনেতা হিসেবেও সমানভাবে আলো ছড়িয়েছেন তিনি। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন গুণী এই অভিনেতা।
‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘চাবুক’-এর মতো সিনেমায় নায়কের ভূমিকায় দেখা গেছে প্রবীর মিত্রকে। এছাড়া ‘রঙিন নবাব সিরাজউদ্দৌলা’ সিনেমায় মূখ্য চরিত্রে ছিলেন তিনি। তার অভিনীত অনান্য উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হচ্ছে- ‘জীবন তৃষ্ণা’, ‘সীমার’, ‘তীর ভাঙা ঢেউ’, ‘প্রতিজ্ঞা’, ‘অঙ্গার’, ‘পুত্রবধূ’, ‘নয়নের আলো’, ‘চাষীর মেয়ে’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘আবদার’, ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়ান’ ইত্যাদি।
কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিলো’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র। আর ২০১৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে তাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়।
প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)। ব্যক্তি জীবনে তার তিন ছেলে, এক মেয়ে। স্ত্রী অজন্তা মিত্রকে ২০০০ সালে হারানোর পর ২০১২ সালে তার ছোট ছেলে আকাশও পরপারে পাড়ি জমান।