দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নায়িকা মাহীর

0

পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ এনে ফেসবুক লাইভে এসে বক্তব্য দেওয়া এবং ব্যবসায়ীকে মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গেল ১৭ মার্চ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী মাহিয়া মাহী ও তাঁর স্বামী রকিব সরকারের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা হয়েছিল।

পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও পুলিশের করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও ব্যবসায়ীর করা মামলা দুটির তদন্তের কোনো অগ্রগতি নেই। গাজীপুর মহানগর পুলিশের (জিএমপি) বাসন থানা পুলিশ মামলা দুইটির তদন্ত করছে। পুলিশ বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার ফরেনসিক প্রতিবেদন এখনো পাওয়া যায়নি। আর ইসমাইল হোসেনের মামলায় ঊর্ধ্বতনদের কোনো বার্তা আসেনি। তাই তদন্ত কাজ সেভাবেই আছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ মার্চ দিবাগত রাতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহী ও তার স্বামী আওয়ামী লীগ নেতা রকিব সরকারের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করা হয়। এরমধ্যে বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রোকন মিয়া বাদী হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে লাইভে এসে বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে একটি মামলা করেন। আর মারধর, ভাঙচুর, চাঁদাদাবি ও জমি দখলের অভিযোগে মাহিয়া মাহী ও স্বামীকে হুকুমের আসামি করে আরও একটি মামলা করেন ইসমাইল হোসেন নামের এক ব্যক্তি। ওই মামলায় ২৮ জনকে আসামি করা হয়।

মামলার অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সিদ্দিক ঢাকা টাইমসকে বলেন, মামলাগুলোর তদন্ত চলছে। একটি মামলার তদন্ত করছেন পরিদর্শক তদন্ত মো. জাহাঙ্গীর আলম। আরেকটি মামলার তদন্ত করছেন এসআই ফারুক হোসেন। তারাই বিস্তারিত বলতে পারবেন।

জানা যায়, গাজীপুরের ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পাশে সাড়ে ৩২ শতাংশ জমি জোর করে দখল করে সনিরাজ কার প্যালেস নামে একটি গাড়ির শো-রুম করেন রকিব সরকার। ওই জমির মালিক মামুন সরকার জমিতে ভবন নির্মাণ করতে গেলে রাকিব সরকার তার নিজস্ব বাহিনীর লোকজন দিয়ে জোরপূর্বক নির্মাণ সামগ্রীসহ লাখ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যান। ইসমাইল হোসেনের একটি রড বাইন্ডিং মেশিন ভেঙে ফেলেন। ১৭ মার্চ ভোরে জমিতে সংস্কারের কাজ করতে গেলে তার নিজস্ব লোকজন এসে ইসমাইল হোসেনকে মারধর করেন। এতে তিনজন আহত হন। এ ঘটনায় সেদিন রাতে বাসন থানায় একটি মামলা করেন ইসমাইল হোসেন।

এই মামলার তদন্তের ব্যাপারে বাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফারুক হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘মামলাটির তদন্ত চলছে। এখনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছ থেকে কোনো নির্দেশনা পাইনি।’

এদিকে শোরুম ভাঙচুরকে কেন্দ্র করে ওইদিন সকালে গাজীপুর মহানগর পুলিশের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে অভিযোগ আনেন মাহী। এই ঘটনায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলাটির তদন্ত করছেন বাসন থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

লাইভে যা বলেন মাহী

একদল দুর্বৃত্ত ‘সনিরাজ কার প্যালেস’ নামের তাঁর স্বামীর গাড়ির শোরুমে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে জানিয়ে মাহী বলেন, ইসমাইল ও মামুন সরকার এ হামলা করছে। গাজীপুর মহানগর পুলিশ (জিএমপি) কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন দেড় কোটি টাকা ‘ঘুষ’ নিয়ে প্রতিপক্ষকে দিয়ে জমি দখল করিয়ে দিচ্ছেন।

এ ব্যাপারে দায়ের করা মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে পরিদর্শক মো. জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলার আলামত সিআইডিতে পাঠানো হয়েছিল ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সিআইডি থেকে কোনো প্রতিবেদন আসেনি। আমরা তাই অপেক্ষা করছি। সিআইডি থেকে ফরেনসিকের প্রতিবেদন এলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া হবে।’

মাহী যখন লাইভে কথা বলেন তখন তিনি ওমরার জন্য সৌদি আরবে ছিলেন। মামলার পরদিন (১৮ মার্চ) সৌদি আরব থেকে দেশে ফেরেন তিনি। বোরকা পরে বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলেও মাহীকে চিনতে পেরে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে তাকে আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন গাজীপুর মহানগর মূখ্য হাকিম (সিএমএম)। গ্রেপ্তারের সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা পরে জামিনে বের হন তিনি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.