দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

জামালপুর জেলার নিবার্চনী হালচাল

0

এস,এম আব্দুর রাজ্জাক

১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত টানা ছয়বার এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। আওয়ামী লীগ সরকারের এই টানা তিনবারের মেয়াদে মির্জা আজমের একান্ত প্রচেষ্টায় পুরো জামালপুর জেলায় ৬০ হাজার কোটি টাকার অধিক উন্নয়ন কাজ চলমান রয়েছে। এই কাজগুলো সমাপ্ত হলে বদলে যাবে জামালপুরের রূপ। জামালপুর হয়ে উঠবে দেশের অন্যতম কয়েকটি জেলার মধ্যে একটি। তাই মির্জা আজমের আওয়ামী লীগের দুর্গ হিসেবে পরিচিত এই আসন বিএনপির দখলে আনা অনেকটাই অসাধ্য বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

১৪১ জামালপুর-৪ আসন (সরিষাবাড়ি) : যমুনা সার কারখানাকেন্দ্রিক এই আসনটি প্রতিবার থাকে জেলাবাসীর নজরে। ১টি পৌরসভা ও ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত জামালপুর-৪ আসনে ১৯৯১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ তিনবার, বিএনপি দুইবার এবং জাতীয় পার্টি ১ বার জয়ী হয়।

এই আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন- সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও বর্তমান এমপি ডা. মুরাদ হাসান, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির মৎস ও প্রাণিবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর রহমান হেলাল, তেজগাঁও থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রশীদ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস সামাদ আজাদ তারা।

জামালপুর ২ আসনে আসনে বিএনপির একক প্রভাবশালী প্রার্থী হলেন- বিএনপির সাবেক মহাসচিব ব্যারিস্টার সালাম তালুকদারের ভাতিজা ও জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবির তালুকদার শামীম। তবে নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত না আসায় নিশ্চুপ রয়েছেন তিনি। এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী দলটির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোখলেছুর রহমান।

জামালপুর-৫ আসন (জামালপুর সদর) : জেলা সদর ও উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় পুরো জেলাবাসীর নজর জামালপুর-৫ আসনে। এই আসনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে। শুধু ১৯৯১ সালে এই আসনে জয় পায় বিএনপি। এরপর টানা পাঁচবার সংসদ নির্বাচনে এই আসন ধরে রেখেছে আওয়ামী লীগ।
জামালপুর ৫ আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা হলেন- জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান এবং বর্তমানে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফারুক আহম্মেদ চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিজন কুমার চন্দ, বর্তমান সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোজাফফর হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ সালেহীন রেজা, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রেজাউল করিম রেজনু, জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ আলী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মারুফা আক্তার পপি।

এই আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন- ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন, সাবেক স্বাস্থ্য উপমন্ত্রী মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল হক এবং সাবেক মহিলা এমপি নিলুফার চৌধুরী মনি। এই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও জামালপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন খান।

আসছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে জামালপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ মো. ওয়ারেছ আলী মামুন বলেন, ‘নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তাই আমরা এই বিষয়ে আগেই কিছু বলতে পারছি না। তবে বিএনপি নির্বাচনে আসলে জামালপুরের ৫টি আসনেই বিপুল ভোটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি জয়ী হবে। কারণ, বর্তমান সরকার জনগণের ভোটের নির্বাচত নয়। এই সরকার জনগণের ভোটাধিকার হরণ করেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ব্যর্থ। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাই জনগণ এবার বিএনপির পক্ষে তাদের রায় দেবেন।

সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে জামালপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ বাকী বিল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগের একটি গণতান্ত্রিক সৌন্দর্য আছে। নির্বাচনের আগে অনেক প্রার্থী থাকে। যখন মনোনয়ন হয়ে যায় তখন সবাই এক হয়ে যায়। আগামী জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে জামালপুরের জনসাধারণ আবারো নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জামালপুরের ৫টি আসনেই জননেত্রী শেখ হাসিনাকে তথা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে পুনরায় জয়যুক্ত করবে। কারণ, শেখ হাসিনা সরকারের আমলেই জননেতা মির্জা আজমের প্রচেষ্টায় জামালপুরে ব্যাপক উন্নয়নের জোয়ার দৃশ্যমান। এসব উন্নয়নকাজ সমাপ্ত হলে আমাদের জামালপুর জেলা হবে বাংলাদেশের অন্যান্য উন্নত এবং স্মার্ট জেলা গুলোর মধ্যে অন্যতম। এ কারণেই জামালপুরের সর্বস্তরের ভোটার ভাই বনেরা এবারের জাতীয় নির্বাচনে আবারও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তথা নৌকা মার্কায় ভোট দেবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.