দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতা: বাড়ি-ঘর ভাঙচুর-আটক এক

0

স্টাফ রিপোর্টার:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় জামালপুরের সরিষাবাড়ি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বসত বাড়ি-ঘরে ভাঙচুর ও মারপিট চালিয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা। তারা নৌকা প্রতীকের প্রার্থী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলালের সমর্থকদের বসতবাড়ি ও দোকানে, ক্যাম্পে হামলা , মারপিট ও মোবাইল ফোনে নানা হুমকি অব্যাহত রেখেছে। সোমবার (৮ জানুয়ারি)দফায় দফায় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের সেঙ্গুয়া বাজারে ব্যবসায়ী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে,বিলবালিয়া , বনগ্রাম ও শিবপুর গ্রামে এ হামলা-ভাঙচুর ও মারপিট ও মোবাইলে হুমকির ঘটনা অব্যাহত রেখেছে। এ ঘটনায় জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (এএসপি) সোহরাব হোসাইন সহিংসতা সংগঠিত এলাকার ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, উপজেলার মহাদান ইউনিয়ন কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য মাহবুবুর রহমান কে মারধর করে এবং তার কাপড়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয় । নৌকা প্রতীকের মহাদান ইউনিয়ন কমিটির যুগ্ম সমন্বয় আব্দুর রাজ্জাক শাহিনের বাড়িতে হামলা চালিয়ে বসতঘরের বেড়া ও দুটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। একই গ্রামের সাইফুল ইসলাম অক্ষরের বসত ঘরের কাঁচের জানালা ভাঙচুর, আবুল কালাম আজাদ এর ঘরের বেড়া ভাঙচুর, ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম সোহরাব কে হুমকি প্রদান করেন বিলবালিয়া পশ্চিমপাড়া গ্রামের মরহুম আব্দুস সাত্তারের ছেলে পিন্টু ও লোকমান খা’র ছেলে আল আমিন হুমকি প্রদান করে।
এ ঘটনার সাথে জড়িত বিলবালিয়া গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে ফরিদ মিয়া, সন্তোষ এর ছেলে রমজান আলী, দানেশ মিয়ার ছেলে আলমগীর, আলহাজ্ব উদ্দিন ও আকরাম হোসেন সহ প্রায় ২০/২৫ জন লোক জড়িত ছিল বলে অভিযোগ নৌকা প্রতীকের সমর্থকদের
এদিকে বনগ্রাম চকপাড়া এলাকার জয়নাল আবেদীনের বসত ঘরে হামলা ভাঙচুর ও নগদ অর্থ লুটের ঘটনার ঘটেছে বলে জয়নাল অভিযোগ করেন। বনগ্রাম গ্রামের শেখ পাড়া এলাকার রবিউল ইসলামকে মারধর ও তার
সেচ পাম্পের ঘর ভাঙচুর করে এবং এলাকা ছাড়ার হুমকি প্রদান করলে গ্রাম ছেড়ে পলাতক রয়েছে। বনগ্রাম গ্রামের শেখ পাড়া এলাকার নৌকা প্রতীকের এজেন্ট জুলহাস মিয়ার দোকান ভাঙচুর ও প্রতিবেশী হাজেরা বেওয়া ও আনিছের বসত ঘরের বেড়া ভাঙচুর করে। একই বাড়ির সাগর মিয়া ও শিবপুর গ্রামের শামসুল ইসলাম কে ট্রাক প্রতীকের সমর্থক রাজু ও মমিনুর মারপিট করে। এ হামলার সাথে জড়িত বনগ্রাম গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মাফিজুর রহমান, আলিফ মিয়া , শিমুল মিয়া, রবিন, ইসমাইল, মামুন, ঝিলিক, আলো ও আনিছ মিয়া, আশরাফ, স্বাধীন, টুটুল,সহ ২০/২৫ জন।
সানাকৈর বাজারে নৌকা প্রতীকের নির্বাচনী ক্যাম্পে সাঁটানো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুর করে দ্রুত অন্য একটি তালা লাগিয়ে চলে যায় বিজয়ী ট্রাক প্রাতিকের সমর্থকরা । উপজেলার ভাটারা ইউনিয়নের ফুলদহ রেলওয়ে ক্রসিং এলাকার শেখ রাসেল স্মৃতি সংসদের অফিস নৌকার নির্বাচনী ক্যাম্প হিসেবে ব্যবহার করায় অফিস ও আসবাবপত্র ভাঙচুর এবং উপজেলার ইউনিয়নের চর আদ্রা গ্রামের রবিউল ইসলাম এর কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে ট্রাক প্রতীকের সমর্থকরা।
হামলা ও ভাঙচুর ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে উপজেলার মহাদান ইউনিয়নের বিলবালিয়া গ্রামের আলহাজ উদ্দিন নামে এক শিক্ষককে আটক করেছে বলে সরিষাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মুশফিকুর রহমান নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, গত ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আব্দুর রশিদ এর ট্রাক প্রতীক নিয়ে ৫০ হাজার ৬’শ ৭৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন । অপর প্রার্থী নৌকা প্রতীকের প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল ৪৭ হাজার ৬শ ‘৩৮ ভোট পেয়ে পরাজিত হন।
এ সহিংসহ ঘটনার নেপথ্যে মহাদান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক শাহীন ও অনন্যরা অভিযোগ করেন।
জানতে চাইলে মহাদান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম আনিছুর রহমান বলেন, নির্বাচন পরবর্তী এ ধরনের সহিংসতা ঘটনা ঘটানো ঠিক হয়নি।
এ ঘটনার খবর পেয়ে জামালপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল (এ এস পি) সোহরাব হোসাইন জানান, ভাঙচুরের ঘটনায় এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে।এ ঘটনার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আবারও সহিংসতা এড়াতে পুলিশ সব সময় প্রস্তুত রয়েছে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.