দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

বাটিকামারি উচ্চ বিদ্যালয়ের উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হুকুমে ৩ শিক্ষক মিলে শিক্ষার্থীকে গাছে বেঁধে রাখার অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার :জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের হুকুমে ৩ শিকক্ষক মিলে ইউকেলিকটাস গাছে বেধে রাখার অভিযোগ শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীর অভিবাবক মঈনাল মিয়ার। এ ঘটনাটি গত ১১ ফেব্রæয়ারী রোববার উপজেলার আওনা ইউনিয়নের বাটিকামারী উচ্চ বিদ্যালয় চলাকালীন সময়ে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনাটি ঘটনার পর থেকে ধামাচাপা দেয়ার
একপর্যায়ে শনিবার ও রবিবার সরেজমিনে শিক্ষার্থী ও অভিবাভবক এবং এলাকাবাসী দের কাছ থেকে এসব অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে চলছে চাপা ক্ষোভ।এ বিষয়টি জানাজানি করলে শিক্ষকের হাতে নির্যাতনের শিকার ইয়াকুব আলী (১৫) কে এমন টিসি দেওয়া হবে বাংলাদেশে কোথাও কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারবে না এমন হুমকি দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ খান।এ হুমকি’র বিষয়টি শিক্ষার্থীর পিতা মঈনাল মিয়া নিশ্চিত করেছেন।
শিক্ষার্থী ও অভিবাভক সুত্রে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী উপজেলার আওনা ইউনিয়নের বাটিকামারী ঈদগাহ মাঠ এলাকার বাসিন্দা রাজমিস্ত্রী মঈনাল মিয়ার ছেলে বাটিকামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী গত ১১ ফেব্রæয়ারী রোববার বিদ্যালয়ে যান।বিদ্যালয়ের ৪র্থ ঘন্টায় একাডেমিক ভবনের ৩য় তলায় বিদ্যালয়ের রুটিন মোতাবেক শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিএসসি শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী কে অংকের সুত্র বলতে বলেন। কিন্তু শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী বলতে না পারায় তাকে কিছু বকা ঝকা দিলে শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলী বলে ঠিক চেষ্টা করবো এ কথা বলার এক পর্যায়ে শিক্ষার্থী সেলিম মিয়ার স্কেল নিয়ে ল্যাব অ্যাসিস্টেন্ট রফিকুল ইসলাম ওই শিক্ষার্থীকে একটি বারী দেয় এবং মোবাইলে ফোন করে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশীদ ও বাংলা শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম কে শ্রেনী কক্ষে ডেকে নিয়ে যায়। পরে সহকারী শিক্ষক হারুন অর রশীদ ও বাংলা শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম সেখানে গিয়ে ইয়াকুব আলীর শার্টের কলার ধরে এবং পিছনের দিকে জাহাঙ্গীর আলম ধরে কিল ঘুষি মারলে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ইয়াকুব আলীর পক্ষ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শিক্ষার্থীদের ক্ষমা প্রার্থনা উপেক্ষা করে ৩য় তলা থেকে তিন শিক্ষক মিলে টেনে হেচড়ে নিয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে হাজির করেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ খান শিক্ষার্থী ইয়াকুব আলীকে গাছে বাধার জন্য ওই তিন শিক্ষককে হুকুম প্রদান করেন। প্রধান শিক্ষকের কথামত ওই দিন শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ের দক্ষিন কোনায় একটি ইউকেলিকটাস গাছের সাথে শিক্ষার্থীর পিঠ ঠেকিয়ে দু হাত পিছনে দিয়ে দুই হাতে বাধন দেওয়া হয় এবং চড় থাপ্পড় দেওয়া হয়। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ খান ১৫/২০ মিনিট পর ইয়াকুব আলী কে গাছের সাথে দু হাতের বাধন খুলে পাছায় লাথি মেরে ওই শিক্ষকদের কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলেন। প্রধান শিক্ষকের কথা মত ৩ বার ক্ষমা চেয়ে বিদ্যালয়ের শ্রেনী কক্ষে ফিরে যায় ইয়াকুব আলী । এ সময় বিষয়টি জানা জানি না করার জন্য নির্দেশ দেন শিক্ষকরা। এ বিষয়টি বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীরাও প্রত্যক্ষ হন। ওই দিন থেকে লজ্জায় শিক্ষার্থী স্কুলে পাঠ দান থেকে বিরত থাকেন। এ বিষয়টি রোববার (১৮ ফেব্রæয়ারী শিক্ষকরা ইয়াকুব আলী কে বিদ্যালয়ে ডেকে নিয়েছিল বলে জানা গেছে।
বিদ্যালয়ের প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষাথী রাকিম মিয়া জানান, ইয়াকুব আলী নামে নবম শ্রেনীতে পড়–য়া ছাত্রকে হেড় স্যারের অফিসের দক্ষিন কোনা একটি গাছের সাথে বেধে রাখতে দেখেছি।
নবম শ্রেনীর শিক্ষার্থী স্বর্ণা খাতুন জানান, আমরা ইয়াকুব আলী’র পক্ষ থেকে ক্ষমা চেয়েছি। ক্ষমা না করে ইয়াকুব কে ৩য় তলার শ্রেনী কক্ষ থেকে টেনে হেচড়ে নিয়ে গাছের সাথে বেধে রেখেছিল।
শিক্ষকের হাতে নির্যাতনের শিকার ইয়াকুব আলী’র পিতা রাজমিস্ত্রী মঈনাল মিয়া জানান, আমার ছেলে পড়া না পারলে বা বেয়াদবী করে থাকলে একটি বারী না ২০ টি বারী মারলেও আমার কোন দু:খ নাই। আক্ষেপ একটাই আমার ছেলেকে তয় তলা থেকে তিন শিক্ষকে নির্যাতন করে আবার গাছের সাধে বেধে রাখে । এখন তো গরু চোরদেরকেও কেউ গাছের সাথে বাধে না। আমি এর বিচার চাই। তিনি আরও জানান, আমি আমার ছেলের বিষয়ে মুখ খুলে টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেবে বলে প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ খান আমাকে হুমকি দিয়েছে।
এ ব্যাপারে ৭ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর অভিবাভবক ফজলু মিয়ার স্ত্রী ফরিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বিএসসি এর বিরুদ্ধে প্রাইভেট না পড়ায় শিক্ষার্থীদের বেত্রাঘাত করে এবং ফেল করিয়ে দেবে বলে হুমকি দেয়। তিনি আরও জানান আমরা এর আগে অভিযোগ দিয়েছিলাম কোন কাজ হয়নি বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বলেন, বিষয়টা এ রকম পরে তাকে ওই শিক্ষকের কাছ থেকে মাপ ঠাপ চাওয়ে দিয়েছি।ঝামেলা শেষ। আর এগুলো নিয়ে এই তিলকে তাল বানাইতাছে এগুলোতো হতে পারে না। এগুলো হলে প্রতিষ্ঠান চালানো সম্ভব না।এই মুল কথা।আর কোন এ রকম কোন ঘটনা আসলে ঘটেনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ক্লাশ রুমে এক শিক্ষককে এক ছেলে হুমকি দিয়েছে বের হলে তাকে মারবে বলে হুমকি দিয়েছিল। যে কারনে তাকে ডেকে এনে চু চার কথা বলে দিয়ে শিক্ষকদের নিকট থেকে মাপ-টাপ চেয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মধ্যস্থতা করে দেওয়া হয়েছে। আর সেখানে এ রকম তিল কে তাল বানাইতাছে এগুলা তো হতে পারে না। সঠিক না। এগুলো নিয়ে কাদা ছুড়াছুড়ি করলে প্রতিষ্ঠানকি চালানো যাবে এ রকম হলে। শিক্ষার্থীকে গাছের সাথে বেধে নির্যাতন করার বিষয়টি সঠিক না বলে মন্তব্যে করেন তিনি।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লুৎফর রহমান বলেন, এ বিষয়টি পরস্পর শুনেছি কিন্তু আমার কাছে কোন শিক্ষক ও ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকেও কেউ জানায়নি বলে মন্তব্য করেন।

জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মেমাজাম্মেল হক বলেন, এ বিষয়ে আমি কোন তথ্য পাইনি আমাকে শিক্ষকরা ও শিক্ষার্থীও পরিবার পরিজনও জানায়নি। কোন অভিযোগ পেলে সতত্যা যাচাই পূর্বক দোষীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।

Leave A Reply

Your email address will not be published.