দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

প্রেম ঘটিত কারণে ধনবাড়ী মুশুদ্দির কৃষক আমান আলী হত্যা মামলায় পুলিশের তদন্তে গড়িমসি ও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ স্বজনদের

0

ধনবাড়ী,টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীর মুশুদ্দিতে কৃষক আমান আলীকে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ হওয়া মামলার তিন মাস পার হলেও ওই মামলার অভিযোপত্র জমা দেয়নি ধনবাড়ী থানা পুলিশ। কোনো আসামিকেও তারা গ্রেপ্তার করেনি।
এ নিয়ে স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম ক্ষোভ ও হতাশা। আসামিপক্ষ প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক ছত্রছায়া থাকায় ন্যায়বিচার পাওয়া নিয়েও সংশয় প্রকাশ করছেন আমান আলীর স্বজনরা। নিহত পরিবারের দাবি মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের।
নিহত আমান আলী ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত আয়েত আলীর ছেলে। প্রতিবেশীদের হামলায় আহত হয়ে ৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ১১ মার্চ রাতে আমান আলী মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর থেকেই থানা পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে অভিযোগ করেন নিহতের স্বজনরা। আদালতে মামলার অভিযোপত্র জমা দিতে গড়িমসি ও পক্ষপাতিত্ব করছে বলে অভিযোগ তুলেন তারা।
নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। আমান আলী মারা গেলে ওই রাতেই ধনবাড়ী থানায় ৪-৫ জনকে অজ্ঞাতসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি করেন নিহতের চাচা মো. মনিরুজ্জামান।
মামলার আসামিরা হলেন- মো. সবুজ খান, ফারুক খান, রঞ্জু মিয়া, সাইদুর রহমান ও মো. ফরিদ। আসামিরা মুশুদ্দি উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার বিবরণী ও নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত আমান আলীর চাচা মনিরুজ্জামানের ছেলে মেহেদী হাসানের সাথে সাইদুর রহমানের মেয়ে কলেজ ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেহেদীদের বাড়িতে নিজ ইচ্ছায় চলে আসে সেই মেয়ে।
পরে স্থানীয় মাতাবরের মাধ্যমে তাকে সাইদুরের পরিবারে কাছে ফেরত দেয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ৫ মার্চ বিকালে মেহেদীদের বাড়ির সামনে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সাইদুর, আমান আলী, সাগর মিয়া ও নাজিমদের উপর হামলা চালায়। হামলাতে আমান আলীসহ ৭ জন আহত হন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় আমান আলীকে ধনবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তার অবস্থার বেগতিক দেখে চিকিৎসক তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানেও তার অবস্থা আশংকাজনক হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
ঢাকায় সাত দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ১১ মার্চ রাতে মারা যান তিন সন্তানের জনক আমান আলী। হত্যা মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দিতে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ধনবাড়ী থানার এসআই আবু বক্কর সিদ্দিক গড়িমসি ও পক্ষপাতিত্ব করছেন অভিযোগ বাদি মো. মনিরুজ্জামান ও নিহতের স্বজনসহ এলাকাবাসীর।
নিহত আমান আলীর স্ত্রী রেজিনা বেগম ও ছেলে মো. শাহাদৎ হোসেন জানান, আমরা গরিব মানুষ। আমাদের পাশে দাঁড়ানোর মত কেউই নেই। দ্রুত হত্যার আসামিদের গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জোর দাবি জানাই।
ওই হত্যা মামলার চূড়ান্ত মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদন হাতে পেয়েছেন বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও ধনবাড়ী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু বক্কর সিদ্দিক। বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। দ্রুত সময়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আমার সংবাদকে জানিয়েছেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মধুপুর সার্কেল) ফারহানা আফরোজ জেমি।

Leave A Reply

Your email address will not be published.