দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

মাতামুহুরী নদীর সংরক্ষিত রিজার্ভ অংশ থেকে বালু উত্তোলন

0

সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
মাতামুহুরী রিজার্ভ অংশ থেকে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বালু উত্তোলন করার তথ্য পাওয়া গেছে। আলীকদম কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরি সড়কের কুরুকপাতা বাজারের পাশের চর থেকে বাচ্চু নামের এক ঠিকাদার স্কেভেটর এ কাজ করেছে বলে জানাগেছে। বালু তোলার জন্য চেইন স্কেভেটর নেয়ার ফলে সড়কের কার্পেটিং এর ক্ষতি হওয়ার দৃশ্য দেখা যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, মাতামুহুরী রিজার্ভে মাতামুহুরী নদীর কুরুকপাতা বাজার সংলগ্ন একটি স্থানে প্রকাশ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। এতে নদী পাড়ের রিজার্ভের দু’তীরে পাহাড়ের ঢালু নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আতঙ্কা করেছেন স্থানীয়রা।
এ ধরনের পরিবেশ বিদ্বেষী কাজে নদীর গতি প্রকৃতি হারিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ঐ এলাকার রিজার্ভ ভূমি। এছাড়া অবৈধভাবে উত্তোলন করা এসব পলিমাটি মিশ্রিত বালু ব্যবহার করা হচ্ছে সড়ক নির্মানে। স্থানীয়রা জানান, মাতামুহুরী রিজার্ভ ভেদ করে নির্মিত হয়েছে আলীকদম কুরুকপাতা-পোয়ামুহুরী সড়ক।
এর আগে কতিপয় অসাধু সাব কন্টাক্টারেরা মাতামুহুরী রিজার্ভের ছড়া নালা থেকে পাথর উত্তোলন করে রিজার্ভের অপুরণীয় ক্ষতিসাধন করেছে। পোয়ামুহুরী থেকে সীমান্ত ঘেঁষে চলমান সড়কের কাজে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে বালুর আদলে রিজার্ভ অংশের নদীর পলিমাটি।
এর ফলে কোটি কোটি টাকার কাজের গুনগত মান কি হচ্ছে; সেটা স্থানীয়দের জানা নেই। তবে অসাধু ঠিকাদার সরকারি সম্পদের ক্ষতি করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের। গত কয়েক দিন ধরে বাচ্চু নামের এক ঠিকাদার বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে মাতামুহুরী রিজার্ভ অভ্যান্তরে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে চলছে। এই অবৈধ কাজ বন্ধ করতে মাতামুহুরী রেঞ্জ কর্মকর্তা একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করে। কিন্তু চতুর ঠিকাদার বাচ্চুর নিয়োগকৃত স্থানীয় সিন্ডিকেটের সংশ্লিষ্টতার কারনে অভিযান সফল হচ্ছেনা বলে জানাগেছে।
মাতামুহুরী রেঞ্জ অফিসার জসিম উদ্দিন জানান, তিনি কয়েক দফা অভিযান করেও ধরতে পারছেন না বালু উত্তোলনকারীদেরকে। তবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে রেঞ্জ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। জানাগেছে প্রতি এক কিলোমিটার রাস্তা তৈরি করতে কর্তৃপক্ষ প্রায় চার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দিলে প্রভাবশালী মহল থেকে তাদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন। এই ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে বনবিভাগকে অভিযোগও করছেন না। কুরুকপাতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বলেন, কুরুকপাতা বাজারের চর থেকে গত কিছুদিন আগে ২০/৩০ গাড়ি বালু নিয়েছে। এর পর বন বিভাগ অভিযান শুরু করলে সেখান থেকে বালু তোলা বন্ধ করে দেয়। চেয়ারম্যান জানান, বর্তমানে কুরুকপাতার আশেপাশে কোনো চর থেকে বালু তুলতে দেখা যাচ্ছেনা। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন জানান, ঐ স্থানে বাচ্চু নামের এক ব্যক্তির লোকেরা বালু উত্তোলন করেন। বালু তোলার জন্য নদী পয়েন্টে চেইন স্কেভেটর নেয়ার ফলে কার্পেটিং সড়কের গায়ে আঁছড়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কঠোরতা দেখানো প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদার বাচ্ছুকে কয়েক দফা মুঠোফোন কল করা হয়। কিন্তু রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয় নাই।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.