সাইফুর রহমান শামীম, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি।।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নে হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার দুপুরে ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে গত দুই মাসের পাওনা ৬০ কেজির জায়গায় ৫০ থেকে ৫২ কেজি করে চাল দিলে প্রতিবাদ করে সুবিধাভোগীরা।
এসময় তাদেরকে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করা হলে ইউনিয়ন পরিষদেই ঘন্টাব্যাপী বিক্ষোভ করে কার্ডধারীরা। খবর পেয়ে সাংবাদিকরা সেখানে এলে বিতরণ বন্ধ রেখে পরিষদে তালা লাগিয়ে সটকে পড়ে গ্রাম পুলিশরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধামশ্রেণি ইউনিয়নে ২১০জন দু:স্থ নারীকে ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেয়া হয়। এর আগে নানান অজুহাতে সুবিধাভোগীদের ৩ থেকে ৪ কেজি পর্যন্ত চাল কম দেয়া হতো। এবার সেই জায়গায় ৮ থেকে ১০ কেজি করে কম চাল দেয়ায় প্রতিবাদ করে কার্ডধারীরা। এনিয়ে বসচা হয় বিতরণের দায়িত্বে থাকা গ্রাম পুলিশের সাথে। পরে প্রতিবাদকারীরা সেখানেই বিক্ষোভ করতে থাকে।
কার্ডধারী সুফিয়া, মরিয়ম, জোহরা ও তরিকুল জানান, শুক্রবার অসৎ উদ্যোশে চেয়ারম্যান ও ট্যাগ অফিসার যোগসাজস করে মে ও জুন মাসের চাল তাদের অনুপস্থিতিতে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে বিতরণ করে। আমাদেরকে ৬০ কেজির জায়গায় ৮ থেকে ১০ কেজি করে চাল দেয়া হচ্ছিল। এনিয়ে প্রতিবাদ করলে আগামিতে তাদেরকে চাল দেয়া বন্ধ করা হবে বলে হুমকী দেয়া হয়।
এছাড়াও কার্ডধারী আফরোজা জানান, আমি এক মাসেরও চাল পাইনি। আজ স্বাক্ষর নিয়ে রেখে দিয়েছে। অপর কার্ডধারী মোর্শেদা, আমিনা, শিরিনা, রুবিনা, হাছিনা ও মনোয়ারা জানান, দফাদার ছকিয়তসহ অন্য চৌকিদাররা আমাদের স্বাক্ষর নিয়ে কার্ড জমা করেছে। কিন্তু তারা আমাদেরকে চাল না দিয়ে আপনাদেরকে দেখে পালিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্ত ট্যাগ অফিসার ও বিআরডিবি’র উপ-প্রকল্প পরিচালক রিয়াজুল হক জানান, শুক্রবার চাল বিতরণ করা সম্পূর্ণ নিয়ম বহির্ভূত। ৮জুলাই আমাকে জানানো হয় চাল বিতরণ করা হবে। কিন্তু কবে বিতরণ করা হবে তা জানানো হয়নি। এর আগেও আমাকে না জানিয়ে বিতরণ করায় সংশ্লিষ্টদের কাছে অভিযোগ করেছি।
বিষয়টি নিয়ে ধামশ্রেণি ইউপি চেয়ারম্যান রাখিবুল হাসান সরদারের কাছে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উলিপুর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শাহানা আক্তার জানান, ভিজিডি চাল বিতরণে আমাদের চিঠি দিয়ে জানাতে হবে। বিতরণকালে অবশ্যই ট্যাগ অফিসারকে উপস্থিত থাকতে হবে। কিন্ত তারা কিছুই মানেননি। শুক্রবার চাল বিতরণ ও ওজনে কম দেয়ার অভিযোগে বিতরণ বন্ধ করার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে উলিপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর-এ-জান্নাত রুমি জানান, ভিজিডির’ চাল ওজনে কম দেয়ার খবর পেয়ে মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখার নির্দেশনা দিয়েছি। চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। পরবর্তীতে ইউপি চেয়ারম্যান ও ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে বিতরণ করা হবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।v