দৈনিক নবতান
জনতার সংসদ

BREAKING NEWS

পপ কিংবদন্তি মাইকেল জ্যাকসনের জন্মদিন

0

বিশ্ব সংগীতের ইতিহাসে অমর মাইকেল জ্যাকসন। তিনি ছিলেন একাধারে একজন মার্কিন সংগীতশিল্পী, গীতিকার, নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী। তাকে ডাকা হতো ‘পপ কিং’ নামে। পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও বহুল বিক্রিত অ্যালবামের গায়ক তিনি। আশির দশকে জ্যাকসন জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান।

মাইকেল জ্যাকসনই প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মার্কিন শিল্পী, যিনি মার্কিন মিউজিক টেলিভিশন- এমটিভিতে এত জনপ্রিয়তা পান। বলা হয়, তার গানের ভিডিওর জন্যই এমটিভির ব্যাপক প্রসার ঘটেছিল। গানের সঙ্গে জ্যাকসনের নাচের কৌশলগুলোও ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার জনপ্রিয় নাচের মধ্যে রয়েছে রোবোট ও মুনওয়াক।

মঙ্গলবার সেই প্রয়াত কিংবদন্তির জন্মদিন। ১৯৫৮ সালের ২৯ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রের আফ্রিকান-আমেরিকান একটি পরিবারে জন্ম হয়েছিল তার। জ্যাকসনের ডাকনাম ছিল ওয়াকো জ্যাকো। কিন্তু নামটি খুবই অপছন্দ ছিল জ্যাকসনের। তাই পরবর্তীতে ওয়াকো জ্যাকো নাম বদলে তিনি নিজের নাম রাখেন মাইকেল জ্যাকসন।

১০ ভাইবোনের মধ্যে অষ্টম ছিলেন জ্যাকসন। তার বাবা জো জ্যাকসন পেশায় ছিলেন ইস্পাত শ্রমিক। তিনি মুষ্টিযোদ্ধাও ছিলেন। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় একটি ব্যান্ডদলে গিটার বাজাতেন। মাইকেলের মা ক্যাথরিন জ্যাকসন বাড়তি উপার্জনের জন্য খণ্ডকালীন চাকরি করতেন। পিয়ানো বাজানোতেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন ক্যাথরিন।

মাত্র চার বছর বয়স থেকে গান গাওয়া শুরু করেন মাইকেল জ্যাকসন। পাঁচ বছর বয়সে প্রথম জনসমক্ষে গান করেন। ১৯৬৪ সালে যাত্রা শুরু করে তাদের ব্যান্ডদল ‘দ্য জ্যাকসন ফাইভ’। ব্যান্ডটির সদস্য ছিলেন জ্যাকসন ও তার চার ভাই। ১৯৭১ সাল থেকে জ্যাকসন একক শিল্পী হিসাবে গান গাইতে শুরু করেন।

 

জ্যাকসনের গাওয়া পাঁচটি সংগীত অ্যালবাম বিশ্বের সর্বাধিক বিক্রিত রেকর্ডের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো ‘অফ দ্য ওয়াল’ (১৯৭৯), ‘থ্রিলার’ (১৯৮২), ‘ব্যাড’ (১৯৮৭), ‘ডেঞ্জারাস’ (১৯৯১) এবং ‘হিস্টরি’ (১৯৯৫)। এর মধ্যে ‘থ্রিলার’ আজ পর্যন্ত ১১২ মিলিয়নের উপর বিক্রি হয়েছে, যা বিশ্বের সর্বোচ্চ বিক্রি হওয়া অ্যালবাম।

সংগীতের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে এক আসরে আটটি গ্র্যামি পুরস্কার অর্জন করে রেকর্ড গড়েছিলেন ‘পপ কিং’ মাইকেল জ্যাকসন। এক আসরে এতগুলো গ্র্যামি পুরস্কার ঝুলিতে ভরার রেকর্ড এত বছরেও ভাঙতে পারেননি আর কোনো সংগীতশিল্পী।

জীবদ্দশায় মোট ১৩টি গ্র্যামি পুরস্কার পেয়েছিলেন মাইকেল জ্যাকসন। তিনিই সবচেয়ে বেশি অ্যাওয়ার্ড ও নমিনেশন পাওয়া সংগীত তারকা। এ জন্য হলিউড ওয়াক অব ফেমে ঠাঁই পেয়েছে তার নামে দুটি তারা। একটি তার নিজের জন্য। আরেকটি জ্যাকসন ফাইভ ব্যান্ডের সদস্য হিসেবে।

বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করা এই রকস্টার চলে যান ২০০৯ সালের ২৫ জুন। মাত্রাতিরিক্ত প্রপোফল সেবনে ৫০ বছর বয়সে মৃত্যু হয় জ্যাকসনের। তার মৃত্যুতে সারা পৃথিবীতে শোরগোল পড়ে যায়। ভেঙে পড়ে ইন্টারনেট ব্যবস্থা। মাইকেল জ্যাকসন সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে তার ভক্ত ও সাধারণ মানুষ গুগলে সার্চ শুরু করেন।

সেদিন মাইকেল জ্যাকসন শব্দটি মিলিয়ন মিলিয়ন বার ইনপুট হওয়ায় গুগল কর্তৃপক্ষ ভাবে, তাদের সার্চ ইঞ্জিন ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। যার কারণে তার মৃত্যুর দিনে আধঘণ্টা বন্ধ থাকে গুগুল। কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের ইতিহাসে এমন ঘটনা এই প্রথম। তাই জ্যাকসন ছিলেন, আছেন এবং থাকবেন তার সৃষ্টির মাধ্যমে।

 

Leave A Reply

Your email address will not be published.