সাইফুল ইসলাম: বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি:
পাহাড়ি অঞ্চলে বিভিন্ন রকমারি ফল উদ্ভব হলেও কিছু ফলের মধ্যে রয়েছে জনপ্রিয়তা। সে ফল সারা বছর পাওয়া না গেলেও বছরে শেষের দিকে একবার বাজারে আসে বিক্রির জন্য।
পার্বত্য জেলা বান্দরবানে তরতাজা সবজি হতে শুরু করে যেন নানান রকমারি নতুন ফল জন্মে পাহাড়ের পাদদেশে। সেসব ফলের মধ্যে রয়েছে ‘ঠান্ডা আলু’। স্বাদে মিষ্টি হওয়াই বান্দরবানের দিনদিন কদর বাড়ছে এই ফলটি।
ফলটি নাম ঠান্ডা আলু। মিষ্টি স্বাদের যা দেখতে গায়ের সাদা বাদামি বর্ণের লম্বা ও গোলাকৃতি। এই ফলটি চামড়া পাতলা খোসা ছাড়িয়ে কাঁচা ভাবে আবার রান্না করেও খাওয়া যায়। মারমাদের ভাষায় এই ফলটি নাম “রোয়াই উ”। আর বাংলা ভাষার “ঠান্ডা আলু” নামে পরিচিত। যেটি ইংরেজিতে ম্যাক্সিকান ইয়াম বা ম্যাক্সিকান টার্নিপ বলা হয়।
‘ঠান্ডা আলু’ এই মিষ্টি ফলটি একমাত্র পাহাড়ে পাদদেশে জুমের চাষাবাদে এই আলু চাষ করে থাকে। জুমের নতুন ধানের বীজ রোপন করার সময় জুমের বীজ সাথে ঠান্ডা আলু বীজ বপন করা হয়। ধান উঠে গেলে আলুর গাছগুলো বাড়তে থাকে। নিয়ম অনুসারে এপ্রিল মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত চাষের প্রক্রিয়াজাতকরণ শুরু হয়। সেক্ষেত্রে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি এই তিন মাস পর্যন্ত সাধারণ ঠান্ডা আলুর মৌসুম। মূলত এই ফলের চাষ তিন পার্বত্য জেলায় জুমে চাষ হয় । আবার কিছু কিছু জায়গায় জমিতে চাষ করা হয়। ফলের ভিতরে রয়েছে ভিটামিন সি ও প্রচুর আয়োডিন। এই ফলটি শীতকালে বছর শেষের দিকে বাজারে আসে। ফলে শুরুতে বাজার দাম থাকে বেশ দ্বিগুণ।
রোয়াংছড়ি, ডুলুপাড়া, চড়ুই পাড়া, বাঘমারা সহ গ্রামগুলোতে জমের ধান কাটার কয়েকমাস পরই শুরু হয় ঠান্ডা আলু ফল উত্তোলন। এতে করে হাসিখুশি মনে জুমের বাগান হতে ঘুরে ঘুরে সংগ্রহ করেছে জুমিয়ারা। আবার কিছু জুমের বাগানে ফলন মোটা তাজাকরণ হওয়ার কারণে চার হতে ৫ আটি বেধে প্রেরণ করছে বাজারে। সেই ফল বাজারে আসতে শুরু করলে খুচরা বিক্রেতারা জড়ো হচ্ছে ফলটি কিনতে। নির্দিষ্ট দামে ফলটি কিনে শুরু হয়ে যায় বস্তার মধ্যে প্যাকিং জাতকরন। ঠান্ডা আলু ফলগুলোকে খুচরা বিক্রেতারা কিনে কক্সবাজার সাতকানিয়া চট্টগ্রাম সহ রাজধানীতে ও বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে গাড়ি করে বহন করে।
বান্দরবান শহরে বাজারগুলোতে বেশির ভাগ সময়ে দেখা মিলে এই ঠান্ডা আলু ফলটি। মগ বাজার, বালাঘাটা বাজার, কালাঘাটা বাজার,সহ ছোট খাটো বাজারগুলোতে বেশ জমে উঠেছে এই ফল । ক্রেতারা ভিড় করে দুই থেকে তিন আঁটি ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে বাড়িতে। বাজারের শুরুতেই এই ফলের দাম প্রতি কেজি ১০০-১৫০ টাকা। মধ্যখানে বাজারের দর থাকে ৭০-৮০ টাকা। কিন্তু শেষ সময় বাজারে ৫০ টাকা নিচে পাওয়া যায় নাহ। সর্বোচ্চ দামের মধ্যে এই ফলের বাজারের দর থাকে ১৫০ টাকা শেষ সময় ও ৫০ টাকা। তবে তিন পার্বত্য জেলায় রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানে পাহাড়ি জনগোষ্ঠী পাশাপাশি বাঙালিদের কাছে ও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে।
জানা যায়, জুমের নতুন ধানের বীজ রোপণ করার সময় জুমের বীজ সাথে ঠান্ডা আলু বীজ রোপনে শুরু হয়। এপ্রিল মাস হতে প্রক্রিয়াভাবে শুরু হয় বীজ রোপণের কাজ। মাটি উর্বরতা ঠিক থাকলে বীজ গুলো হতে চারা বের হতে শক্তি জোগান পায়। আবার হালকা ভিজে মাটি হলে ফলটি বড় আকারে ধারণ করে। বীজ রোপনে সময় কোন রাসায়নিক ব্যবহার না করে ফলটি মাটি জোগান পেয়ে উঠে যায়। আবার এই বীজ গুলো পাথরে থাকলে ফলগুলো লম্বা হয়। ভিজে মাটি উপর বীজ রোপণ করলে মোটা ও গোল আকারে ধারণ করে মিষ্টি স্বাদে হয়। ফলটি শুরুতে বাজারে আসে ডিসেম্বর মাস হতে। ডিসেম্বর হতে ফেব্রুয়ারি এই তিন মাস পর্যন্ত বাজার বিক্রি জন্য এসে বিভিন্ন স্থানে পরিবহণ হয়।
বাজারের বিক্রি করতে আসা লালু তংচগ্যা বলন,আমরা জুম চাষ শুরুতে বীজগুলো রোপণ করি। কোন রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়া ফলগুলো উৎপাদন হয়। জু ম থেকে তুলে বিক্রি করতে এসেছি দাম শুরুতেই বেশী হলেও সবাই এসে কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
মগ বাজারে বিক্রেতা থুইবু চিং মারমা জানান, ৩ হতে ৪ মাস বীজ সরক্ষন করে জুমে শুরুতেই রোপণ করি। এখন বাজারের প্রতি কেজি বিক্রি করছি ৯০ টাকা করে। ঠান্ডা আলু ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছে সবাই। আবার খুচরা বিক্রেতাও এক সাথে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এতে লাভ মোটামুটি পাচ্ছি।
খুচরা বিক্রেতা জুবায়েদ ইসলাম জানান, ঠান্ডা আলু ফলগুলো বাজারে আসলে আমরা ১০ হতে ১২ কিনে নিয়ে যায়। এই ফল গুলো কিনে আমরা কক্সবাজার কেরানীহাট চট্টগ্রাম সহ রাজধানীতে বিক্রি করি। বান্দরবান জেলা ছাড়া রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়ি থেকে কিনে নিয়ে যায়। পরিবহণ খরচ বাদে আমাদের লাভ হয়।
বান্দরবান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর উপ- পরিচালক এসএম শাহনেওয়াজ জানিয়েছেন, পাহাড়ে জুমিয়াদের জুম চাষের সময় ধান ও বিভিন্ন রকমারি ফলজ পাশাপাশি ঠান্ডা আলুর বীজ বপন করে থাকেন। তবে মাঝারি ঢালু পাহাড়ি জমিতে ঠান্ডা আলুর ফলন ভালো হয়। জুমের মাটিতে ঠান্ডা আলুর চাষের জন্য কৃষি বিভাগ হতেই সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা
BREAKING NEWS
- গোপালপুরে উন্নত জীবনের সন্ধানে’র উদ্যোগে বৃক্ষ রোপন
- শহীদ জিয়াউর রহমান এর আদর্শ বুকে ধারন করে ছাত্রদল রাজনীতি করতে হবে- জেলা বিএনপি’র সভাপতি শামিম তালুকদার
- গোপালপুরে মানব সেবা সংস্থার বৃক্ষরোপণ
- সিউর সাকসেস স্কুল এন্ড ক্যাডেট কোচিং এর অভিভাবক সমাবেশ অনুষ্ঠিত
- A large public meeting was held at Dhanbari on the initiative of BNPMd.
- BNP initiative in Dhanbari to pray for the souls of those martyred in the mass uprising
- The story of Idris Ali, a humanitarian police inspector of Dhanbari police station
- গণঅভ্যুত্থানে শাহাদৎ বরণকারীদের রুহের মাগফিরাত কামনা ধনবাড়ীতে বিএনপির উদ্যোগে
- দাবি ও অভিযোগ থাকতেইপাড়ে, সমস্যা হতেইপাড়ে তাই বলেকি রাষ্ট্রীয় সেবা বন্ধকরে দেওয়ার অধিকার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের আছেদ
- কাজীপুর জবর দখলকৃত জমিতে রোপন করা ফসল নষ্ট করে উল্টো প্রকৃত জমির মালিককে ফাসানোর চেষ্টা